সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবার ফোনে বলেছিলেন, ‘আমি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী,’ যা মিথ্যা ছিল না। সংবিধান অনুসারে, তিনি এখনো দেশের প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারি রুমে “সংবিধান: ক্ষমতার না জনতার” শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বর্তমান সংবিধানের অধীনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশে আদৌ কোনো সংবিধান আছে কিনা। যদি না থাকে, তাহলে এই সরকার কীভাবে শপথ নিল? আর যদি সংবিধান থেকে থাকে, তাহলে এটি আমাদের জন্য ভয়ংকর ইঙ্গিত বহন করছে, কারণ শেখ হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল আছেন। সংবিধানের ৫৭(ই) অনুযায়ী, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়া পর্যন্ত আগের প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বে থাকবেন।
রুমিন ফারহানা আরো বলেন, ধর্ম ও রাষ্ট্রের অপব্যবহার করে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চলছে। ধর্মকে সামনে এনে ক্ষমতাসীনরা তাদের স্বার্থ রক্ষা করছে, যা নৈতিকভাবে ভুল। তিনি তার ব্যক্তিগত জীবন থেকে উদাহরণ দিয়ে বলেন, তিনি এমন একটি পরিবারের সন্তান, যেখানে নিয়মিতভাবে ছয় ওয়াক্ত নামাজ পড়া হতো। কিন্তু তার বাবা আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন ধর্ম ও রাষ্ট্রকে একীভূত করা উচিত নয়।
তিনি নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান, ধর্মকে তার যথাযথ স্থানে রাখতে এবং রাজনীতি ও রাষ্ট্র থেকে আলাদা রাখতে। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকা সত্ত্বেও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
রুমিন ফারহানা আরো বলেন, সংবিধানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবনার প্রয়োজন আছে। সংবিধান আবার সংশোধন হবে নাকি নতুন একটি সংবিধান রচিত হবে, তা নিয়ে গণভোটের আয়োজন করা যেতে পারে।
তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে করা অতীতের সংশোধনীগুলোর সমালোচনা করে বলেন, প্রতিটি সংশোধনী ক্ষমতাসীন সরকারের ক্ষমতা সংহত করার জন্যই করা হয়েছিল, বিশেষ করে চতুর্থ সংশোধনী রাষ্ট্রের কাঠামোকে সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করেছে।