বছর খানেক পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দল গোছানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে দেশের অন্যয়তম রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন পরিকল্পনাকে সামনে রেখে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য সভা সমাবেশ করার মাধ্যমে আওয়ামীলীগের কমর্কান্ড নিয়ে সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে যেহেতু সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাই তারা তাদের নেত্রীকে মুক্ত করাটাই প্রধান লক্ষ্য। তবে সেটা না পারলেও তার চিকিৎসা করানোর জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গতকাল পররাস্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আইনগত দিক থেকে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার কোনো সুজোগ নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আইন আছে কি নেই—সে বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে চ্যা’লেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আইনজীবী ফজলুর রহমান। এজন্য যে কোনো টেলিভিশনে বা দেশের যে কোনা জায়গায় মন্ত্রীর সঙ্গে টকশো করতে রাজি আছেন তিনি। এতে হেরে গেলে ফাঁসির মঞ্চে যেতেও রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসট্যান্ড এলাকায় জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ চ্যা’লেঞ্জ ছুড়ে দেন আইনজীবী ফজলুর রহমান। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী ফজলুর রহমান বলেন, ‘তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাতে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় সেজন্য আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা দেখা করি। আমাদের যুক্তির বাইরে গিয়ে একটা কথাও বলতে পারেননি আইনমন্ত্রী। বলেছিলেন আমাদের সব কথা ঠিক। ভেবে দেখার জন্য উনাকে যেন একটু সময় দেই আমরা। তিনি আমাদের কাছ থেকে এক মাসের সময় নেন। কিন্তু এক মাস পরে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আইন নেই। আমি আইনমন্ত্রী আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আসুন, বাংলাদেশের কোন টেলিভিশনের টকশো লাইভে বসবেন? বাংলাদেশের কোন প্রান্তের মাঠে বসবেন বলুন? লক্ষকোটি মানুষে দেখুক আপনি আর আমি আইন নিয়ে তর্ক করি খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আইন আছে কি নেই। আমি যদি দেখাতে না পারি আমি ফাঁ’সির মঞ্চে যেতে বাধ্য আছি। আমি আজ সুনামগঞ্জের জনসভা থেকে আপনাকে চ্যালেঞ্জ দিলাম।’
এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসে আ’ক্রান্ত হওয়া সহ তিনি বেশ কিছু জটিল রোগে ভুগছেন, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তার অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া খুব জরুরী। তার পরিবারের পক্ষ হতে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বিএনপি নেত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের নিকট কয়েক দফায় আবেদন করেন। নভেম্বরের শেষের দিকে আইনমন্ত্রী বলেন, যেহেতু তিনি এখন সরাকারের হেফাজতে নেই তাই বলা যায় তিনি এখন মুক্ত। তিনি আরও বলেন, দেশ না ত্যাগসহ আরো বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়ে বেগম জিয়াকে সাময়িকভাবে মুক্তি প্রদান করা হয়েছে, আইনগত দিক থেকে তার বিদেশে যাওয়ার কোনো অনুমতি দেওয়া যায় না.