একজন নারীকে প্রধান বিচারপতি করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আসলে একজন নারীকে বিচারপতি বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সমাজ এতই রক্ষণশীল, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সেজন্য তিনি তা করতে পারেননি। এই আক্ষেপ থেকে গেল।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া-২০২৩ পদক প্রদান অনুষ্ঠানে দুঃখের সুরে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নারীরা শীর্ষে রয়েছে বলেও সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীরা বিচারিক সেবায় অংশ নিতে পারবে না, এটাই ছিল পাকিস্তানের আইন। স্বাধীনতার পর সব আইন পাল্টে দেন জাতির পিতা। এই আইন পরিবর্তনের পর থেকে আমাদের দেশের মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দিতে পারছে
শেখ হাসিনা বলেন, আমি সরকারে এসে দেখলাম আমাদের হাইকোর্টে কোনো মহিলা বিচারপতি নেই। তখন আমি উদ্যোগ নিলাম, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছিলাম, আইনমন্ত্রীকেও বলেছিলাম- যদি হাইকোর্টে একজন বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, তাতে কোনো নারী বিচারপতির নাম না থাকলে আমি কখনোই সেই ফাইলে সই করব না, রাষ্ট্রপতির কাছেও পাঠাব না, সেখান থেকেই যাত্রা শুরু।
তিনি আরও বলেন, “বেগম রোকেয়ার শাসনামলে মুসলিম মেয়েরা ঘরে বন্দী ছিল। শিক্ষার কোনো সুযোগ ছিল না। তবে তার স্বামী সবসময় তাকে সহযোগিতা করেছেন, তার ভাই তাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিজের প্রচেষ্টা উর্দু, বাংলা, আরবি, ইংরেজি, শিক্ষা যেগুলো গ্রহণ করা সেগুলো তার স্বামীর কাছ থেকে শিখেছেন। স্বামীর কাছে আক্ষরিক জ্ঞান এবং বই পড়ার শিক্ষা গ্রহণ করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর তিনিও ভাইয়ের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। স্বামীর নামে একটি স্কুল গড়ে তোলেন। বিদ্যালয়টি নির্মাণের পরও তাকে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কারণ তিনি স্বামীর নামে যে স্কুল করেছিলেন, সেখানে ছাত্রীদের পড়াতে পারত না। বাড়ির বাইরে গিয়ে ছাত্র সংগ্রহ করতেন।এটা করতে গিয়ে অনেক পরিবারের বাধা এবং অনেক প্রতিবন্ধকতা এসেছে। তিনি দমে যাননি কখনও।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা আর পিছিয়ে নেই। খেলাধুলা থেকে রাজনীতি, সব ক্ষেত্রেই নারীরা সফল। সাংবাদিকতা থেকে শুরু করে শিল্পকলা, সবখানেই নারীরা সফল। এখন ইসলামের কথা বলে নারীদের চাকরি থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।