Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / একজন এমপি হয়ে এমন ঘৃণ্য কাজ করবে সেইটা কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারেনি

একজন এমপি হয়ে এমন ঘৃণ্য কাজ করবে সেইটা কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারেনি

একজন এমপি যদি একজন চেয়ারম্যানকে নারধর করে তাহলে বিষয়টি সত্যিই খুব দুঃখজনক বলে বিবেচিত হয়। এমন ঘটনা গটানো একজন এমপির জন্য লজ্জাজনকও বটে। তিনি হলেন একজন উচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি আর একজন চেয়ারম্যানও জনপ্রতিনিধি। সম্প্রতি কুমিল্লা-৪ আসনের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল কর্তৃক দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিল-ঘুষি মারার ঘটনার সঠিক বিচার চেয়েছেন বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশন।

কুমিল্লা-৪ আসনের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল কর্তৃক দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিল-ঘুষি মারার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ‘বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশন’। যথাযথ ব্যবস্থা ও সমাধান না হলে ব্যক্তিত্ব, আত্মমর্যাদা, সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য একযোগে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। রবিবার দুপুরে রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ সমিতির সভাপতি হারুন-অর-রশিদ হাওলাদার। এসময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান বিরু, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আজিজ, ইয়াছিন মিয়া, রেজাউল হক জানু, আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট রিনা পারভীনসহ উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

হারুন-অর-রশিদ হাওলাদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ব্যক্তিগত লাভ ও প্রতিশোধের জন্য গত ১৬ জুলাই এক সংসদ সদস্য (রাজী মোহাম্মদ ফখরুল) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। – এটা শুধু ঘৃণ্য নয়, একটি অভূতপূর্ব কেলেঙ্কারি। এ ঘটনায় জাতীয় মহা সংসদ ভবন এলাকা কলুষিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই জঘন্য ঘটনা সরকারকে বিব্রত করেছে। এ ঘটনা সরকারের উন্নয়ন অর্জনকে ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখছে। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা দেশের ৪৯২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ সকল জনপ্রতিনিধিকে আহত করেছে। আসল ঘটনা আড়াল করে ভুয়া ভিডিওর মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রকৃত ভিডিওটি মহান জাতীয় সংসদের সার্ভারে সুরক্ষিত রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অবশ্যই সাংগঠনিক শৃঙ্খল ভাঙার ব্যবস্থা নেবে। যেহেতু দুজনই আওয়ামী লীগ মনোনীত নির্বাচিত প্রতিনিধি। এ প্রসঙ্গে ঘটনার শিকার মো. আবুল কালাম আজাদ এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে সুষ্ঠু বিচারের আবেদন করেছেন।

বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ সমিতির সভাপতি হারুন-অর রশিদ হাওলাদার বলেন, জনগণ প্রজাতন্ত্রের মালিক, সংগঠন তার নিজস্ব নিয়মে চলবে। এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, যেই হোক না কেন রাজনৈতিক সংগঠনকে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক সংগঠন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে ঘুষ দেওয়া কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।গত ১৬ জুলাই জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল কর্তৃক শালীনতা ও মানবিকতার ভুল হয়েছে।আবুল কালাম আজাদ যেভাবে বলেছেন তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে এবং দ্রুত দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।আমরা এই অমানবিক ঘটনার দ্রুত শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছি এবং দাবি করছি।জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের প্রধান সম্পদ তাদের মর্যাদা;যা আজ ঘুষ খেয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সহকর্মীদের দ্বারা।দেশের কোনো জনপ্রতিনিধি বা রাজনীতিবিদ এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে নিরাপদ নয়, এটা শুধু ব্যক্তিগত মর্যাদাই ক্ষুন্ন করেনি বরং দলমত নির্বিশেষে দেবীদ্বারের সকল মানুষের মর্যাদাকেও আঘাত করেছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সময়ের দাবি। আগামী আগস্টের মধ্যে বিষয়টির কোনো সন্তোষজনক অবসান না হলে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২রা সেপ্টেম্বর স্পিকারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হবে। ১০ সেপ্টেম্বর দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের নিয়ে ঢাকায় সমাবেশ হবে। এরপরও যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, কোনো উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অবমাননা করা হয়, তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়, তাহলে ব্যক্তিত্ব, আত্মমর্যাদা, সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করব। নিজ নিজ এলাকার জনগণকে একসঙ্গে পদত্যাগ করতে হবে। আমি বাধ্য হব।

বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতি কি না এবং এমপিকে ফাঁসানো হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন-অর রশিদ হাওলাদার বলেন, সবাই স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে বসে ছিল। সংসদ ভবন এমপিদের জন্য একটি সংরক্ষিত এলাকা। একজন জনপ্রতিনিধির পক্ষে অন্য জনপ্রতিনিধিকে আঘাত করা মোটেও সঙ্গত নয়।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে ঘটনা শুনে আমরা আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।

এরপর লাউড স্পিকার ব্যবহার করে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, ওই দিন এমপি নিজেই আমাকে আঘাত করেন।বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ সমিতির বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত।

প্রসঙ্গত, একজন এমপি এই ধরণের ঘৃন্য কাজ করবেন সেইটা মানুষ কখনো আশা করেনি। তিনিই যদি এমন করেন তাহলে মানুষ কার উপর ভরসা করবে। যা করবে অশিক্ষিত মানুষরা আর সেই কাজ করছে একজন এমপি। একজন এমপির কাজ হবে বলতে গেলে মানুষের কাছে আদর্শস্বরুপ। সেই আদর্শকেই নষ্ট হচ্ছে কিছু অবিবেচকের মত কাজের জন্য।

About Shafique Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *