চাঁদপুরের মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী দখলের পেছনে একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
রোববার বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ নদী: সংজ্ঞা ও সংখ্যা’ শীর্ষক সেমিনারে মনজুর আহমেদ চৌধুরী এ মন্তব্য করেন।
মনজুর আহমেদ বলেন, এর আগে মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। যারা এই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের বন্ধ করা হয়েছে, তারপর শাস্তিস্বরূপ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। আপনাকে স্ট্যান্ড রিলিজ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সেখানে আবারও অবৈধ বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। আর এখানে একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা। এই হায়েনাদের হাত থেকে নদীকে বাঁচানো যাবে না। হায়েনাদের এই দলের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক শক্তি। চাঁদপুরের ওই নারী মন্ত্রী তাদের সাহায্য করেন।
এর আগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক জলবিদ ড. আখতারুজ্জামান তালুকদার। তিনি দেশে নদীর সংখ্যা ও সংজ্ঞা নির্ধারণের একটি ব্যাখ্যা পেশ করেন।
আখতারুজ্জামান বলেন, জেলা, উপজেলা, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশের নদ-নদীর সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে এখন নদী রয়েছে ১ হাজার ৮৪টি, যার দৈর্ঘ্য ২২ হাজার কিলোমিটার। নদীর সংখ্যা নির্ণয়ে কোনো খরচই রেহাই হয়নি।
এর আগে গত ১০ আগস্ট নদী রক্ষা কমিশনের প্রকাশিত খসড়া তালিকায় দেশের নদ-নদীর সংখ্যা ৯০৭ উল্লেখ করা হয়। তালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন আপত্তি জানায়।
আখতারুজ্জামান বলেন, দেশের প্রতিটি জেলার ওপর দিয়ে ২০টি নদী প্রবাহিত। এবং সর্বোচ্চ ৯৭টি নদী সুনামগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত। দেশে তেল, গ্যাস, সোনা বা সম্পদ নাও থাকতে পারে। কিন্তু নদীর মতো বিশাল সম্পদ আছে, যেগুলোর কোনো হিসাব নেই।
নদীর সংখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদ্মা ও ইছামতি ৩০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ। ইছামতি নদী আছে ১১টি। বিভিন্ন জায়গায় এই নামে পরিচিত। ২৮০ কিলোমিটারের বেশি পাঁচটি নদী রয়েছে। ২০০ থেকে ২৭৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৯ টি নদী রয়েছে। ১০০ থেকে ১৯৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৪২ টি নদী রয়েছে। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে পাঁচটি নদী রয়েছে। ১০ থেকে ৯৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৪৮০ টি নদী রয়েছে। ১ থেকে ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩৭৬ টি নদী রয়েছে। ৪১ কম ১ কিমি. আর ৫৫টি নদীর দৈর্ঘ্যের কোনো তথ্য নেই। পদ্মা দেশের দীর্ঘতম নদী, যার দৈর্ঘ্য ৩৪১ কিলোমিটার।