সারা দেশে ব্যাংক নিয়ে এখন চলছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা পাচার করা সেই সাথে ইসলামী ব্যাংকের সম্পৃক্ততা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এবার এ নিয়ে একটি লেখনী লিখেছেন ড. আব্দুন নূর তুষার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার দেয়া সেই স্ট্যাটাস তুলে ধরা হুবহু:-
এক লোক প্রথমে ছোট একটা ব্যাংকের মালিক হলো। হয়ে নামে বেনামে সেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিলো। নাম বদল করে সেই ব্যাংককে ইসলামী বানিয়ে দিলো।
সেই টাকা দিয়ে আরেকটা ব্যাংক কিনলো। আরেকটু বড় ঋণ। সেখান থেকে নামে বেনামে টাকা তুলে আরেকটা ব্যাংক কিনলো।
এভাবে একটা কেনে ; সেটার টাকা দিয়ে আরেকটা কেনে। এর ফাঁকে জনগণের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ অব্যাহত থাকে। তাই ব্যাংকগুলোর যে তলা ফুটা সেটা কেউ বোঝে না। সবসময় ডিপোজিট কতো সেটা বলে, রিকভারী কতো সেটা বলে না।
নতুন যে ব্যাংক কেনে সেটার টাকা আগেরটায় রাখে। ওখান থেকে আবার তুলে নেয়।
লোকে ভাবে এসব মুনাফা। আসলে এইসব ম্যানুফ্যাকচার্ড হিসাব। ফলস একাউন্টিং। একজায়গার টাকা আরেক জায়গায় পাঠানো। সেখানে অগ্রীম লভ্যাংশ বিতরণ।
এই লোক কিছু কিছু টাকা ( হাজার হাজার কোটি) সরিয়ে জমি হোটেল এসব কেনে। দেশে নয় বিদেশে। সিঙ্গাপুর মালয়শিয়া …
এরপর লিজিং কেনে। প্রতিষ্ঠানে ইসলামী নাম যুক্ত করে। ধর্মপ্রাণ বাঙালি এইসব খুব পছন্দ করে।
এদের কপালে ইবাদত করতে করতে কালো দাগ। দেখলে মনে হয় মাথা ঠুকে মাটির সাথে।
এভাবে করতে করতে সে সবচেয়ে বড় ব্যাংকটার কন্ট্রোলিং শেয়ার কিনে ফেলে।
এখান থেকেও টাকা নিতে থাকে। কিন্তু এর চেয়ে বড় ব্যাংক তো সরকারি। সেটা তো সে কিনতে পারবে না।
সরকারি কিছু আমানত নিয়ে আসে নিজের ব্যাংকে। সেগুলোও নামে বেনামে তুলে নেয়। যেমন তেল গ্যাস বেচার সরকারী টাকা; আই সি বি এর টাকা…
কিন্তু আর তো ব্যাংক নাই কিনতে পারবে। এই বড় ব্যাংকটাও ফুটা ফুটা। নিজের এলাকার লোক চাকুরী দেয়। আইটির লোকজন বরখাস্ত করে নিজের পেয়ারের লোক নেয়। বোর্ড অব ডিরেক্টরসে সবজায়গায় সে টিচার ঢোকায় । আর তারাও তার পেয়ারা লোকজন। সে জানে টিচারদের লোকে বিশ্বাস করে। এরা যে কত বড় পয়সার কাঙ্গাল সেটা তার চেয়ে বেশি কেউ জানে না।
অন্য বড় ব্যাংক মানে তো সোনালী অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক। এটা কিনে তো তলাছিদ্র ব্যাংকের ফুটা ঢাকতে পারবে না। তাই এখন সব খুলে আম নাঙ্গা হতে থাকে।
এরপর কি হতে পারে?
এরপর এরা নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা দেয়। এই লোক অবশ্য এটা করবে না।
অথবা এমনভাবে ঋণ নবায়ন করে যাতে দুশ বছরেও এই টাকা আর ফেরে না। এটা এখনি বলতে শুরু করেছে। বলছে যে এসব ঋণ ভালো । সব ফেরত আসবে।
জনগণের আমানতের টাকা এভাবে পকেটে তুলে নিয়ে টাকার কুমীর হয়।এদের এসব যারা করতে দেয় তারা কারা? তাদের আমরা চিনি।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করেন।আল্লাহ্ আমাদের অধিকাংশকেই চোর বদমাশের জীবন দেন নাই।এই চোর বদমাশরা মনে করে মৃত্যুর পর শাস্তি নাই।ইহকালে তো এরা সব কিনেই রেখেছে।
তবে মৃত্যুই তো এদের বিরাট শাস্তি। এতো হাজার কোটি চুরি করে ভোগ করার আগেই তো সাদ্দাদ নাই হয়ে যাবে।পচে গলে মাটি হয়ে যাবে। কপালের দাগ দিয়ে কাজ হবে না।
এখনই ওমরাহ করতে হয় অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে। কোটি টাকা দিয়ে নাকে মুখে পাছায় নল দিতে হয় ঘন ঘন।আর পরকালে এই চুরির ধন সর্প বিছা হয়ে দংশন করব।আসুন আমরা সকলে মিলে এই সাদ্দাদ দের পরকালে সর্প ও বিছার দংশনের জন্য গণশুভেচ্ছা জানাই।
ওয়েলকাম টু নরক।
ক্ষমতাহীনের এটাই স্বান্তনা।
প্রসঙ্গত, এ দিকে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে দেশে যেন আলোচনার শেষ নেই। একের পর এক কথা উঠছে এ নিয়ে। সরকার পক্ষ থেকে এই সব ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। তবে ইসলামী ব্যাংকের আমানত্দাররা এ নিয়ে আছেন বেশ চিন্তায়।