একজন জেলা প্রশাসক সাধারণত অনেক উচ্চ পর্যায়ের অফিসার। মূলত তিনি একজন বিসিএস ক্যাডার। টার পদের সম্মান অনেক। একটি জেলার উন্নয়ন বা দেকভাল অনেকাংশে জেলা প্রশাসকের উপরও বর্তায়। জেলা প্রশাসক জলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কাজে উপস্থিত থেকে ছেলে মেয়েদের অনুপ্রাণিত করে থাকেন। সম্প্রতি জানা গেছে ডিসি মমিনুরকে ভোটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিচ্ছে ইসি।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে ভোটের দায়িত্ব থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে রিটার্নিং কর্মকর্তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শীঘ্রই জানতে পারবেন। আমরা তাকে রাখব না। আমি সরিয়ে দেব
অবিলম্বে অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। এর জন্য তদন্ত হওয়া উচিত। এটা হালকা শাস্তি নয়। এই মুহুর্তে করণীয় একমাত্র জিনিস তাকে সরিয়ে দেওয়া। পরেরটা পরে দেখা যাবে। এখন কাজ হচ্ছে তাকে সরিয়ে অন্য একজন যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া, যোগ করেন রাশেদা সুলতানা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এলে ডিসি মমিনুর রহমান ওই প্রার্থীর জন্য দোয়া ও ভোট চাওয়ার অভিযোগ ওঠে। গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হলে তা অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, যারা আসছেন তারা একই দলের। দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে না। তখন প্রশাসক এলেন। এই অবস্থায় যাওয়া যাবে না। কিন্তু প্রশাসক এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে বলার পর আমরা নির্বাচন করেছি। নির্বাচন দিয়ে আমাদের কাজ শুরু হয়। তাই দলীয়ভাবে কী হচ্ছে তা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। একজন দাঁড়িয়ে আছে, অন্যজন নেই। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া বেআইনি নয়। আবার কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, এমনটাও নয়। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। কিন্তু কেউ না এলে আমরা তাদের আনব কী করে?
কমিশনার আরও বলেন, দেশে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে, যা কারও কাম্য নয়। ছোটবেলায় আমরা দেখেছি স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে হয় না। কিন্তু অনেক কিছুই অলিখিত হয়ে যায়। এটা বন্ধ করা রাজনৈতিক দলগুলোর কাজ। এটা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়। এখন কোথাও কোনো অনিয়ম হলে আমরা নির্দ্বিধায় আমাদের সিদ্ধান্ত নেব। আওয়ামী লীগ-বিএনপি কিন্তু আমরা আমলে নেব না। আমরা ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রীক দেশ। একটি গণতানতান্ত্রীক দেশে ৫ বছর পর পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশে যোকোনো নির্বাচনের তত্ত্বাবধায়নের জন্য নিয়োজিত থাকে নির্বাচন কমিশনার। বাংলাদেশেও প্রধান নির্বাচন কমিশন সহ মোট ৫ জন কমিশনার রয়েছেন এবং তারাই দেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো পরিচালনা করে থাকেন।