গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হন বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের হেড অব সেলস হুমায়ুন কবির ওরফে আরজে নীরব। ১ দিনের রিমাণ্ড শেষে আদালতের নির্দেশে কারাগারে রয়েছেন তিনি। তবে কঠিন এই বিপদের দিনে তাকে ভুলে যাননি স্ত্রী ও অভিনেত্রী লাবণ্য লিজা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক স্ট্যাটাস দিয়ে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আর এরই জের ধরে দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকীর মাসে ফের এক স্ট্যাটাস দিয়ে আরজে নীরবের প্রতি নিজের ভালোবাসার জানান দিলেন স্ত্রী লাবণ্য।
যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আজীবন পাশে থাকব বলে এ মাসেই দুজনে কবুল বলেছিলাম। পাশে ছিলাম, আছি, থাকব শেষ পর্যন্ত, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘ভালোবাসি, বিশ্বাস করি নিজের থেকেও বেশি। আর সম্মান করি সব কিছুর ঊর্ধ্বে।’
প্রতিটি মুহূর্তে আরজে নীরবকে অনুভব করেন লাবণ্য। দুজনের পরিচয় হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কখনো এতদিন আলাদা থাকেননি তারা। তাদেরকে সবসময় একে অন্যের ভালোবাসার রেখার মধ্যে দেখা গেছে। আর তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বামীকে একটু বেশিই মিস করছেন এই অভিনেত্রী।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুই বছর আগে পোস্ট করা একটি ছবি শেয়ার করে নীরবের স্ত্রী লিখেছেন, ‘আমাদের দেখা হওয়ার দিন থেকে আজ পর্যন্ত এই প্রথম এতগুলো দিন আমরা আলাদা (সঙ্গে মন খারাপের ইমোজি)। আল্লাহ সহায় হোক।’
নীরবের উদ্দেশে স্ত্রী লাবণ্যর ভাষ্য- তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত, আরও বেশি হব। এই অন্ধকার কেটে যাবে, ইনশাআল্লাহ। অন্য সবার থেকে আমি ভালো করে জানি, তুমি দোষী নও। তুমি সবসময় তোমার সাধ্যের বাইরেও মানুষকে সাহায্য করেছ। তুমি কখনও কাউকে আঘাত করার কথা ভাবতেও পারো না। কিন্তু আমি ভালো করে চিনতেছি, কে আমাদের বন্ধু আর কে শত্রু।
নীরব-লাবণ্য দম্পতির একমাত্র মেয়ে নিয়া। বয়স তিন বছর। বাবার কোল ছাড়া সে ঘুমাতো না। বাবা চোখের আড়াল হওয়ার পর থেকেই সারা বাড়িতে বাবাকে খোঁজে এই শিশুকন্যা। এখনও প্রতিরাতে জেগে জেগে বাবার সঙ্গে মিছে মিছে কথা বলে সে। তার চাওয়া, ‘পাপ্পা তুমি আসো।’
‘কেন চলে গেলেন নিয়াকে একা ফেলে? আপনি তো জানেন আপনার হাতের ওপর ছাড়া ওর ঘুম আসে না! আমাকে আর নিয়াকে কার কাছে রেখে গেলেন নীরব?’ এভাবেই নিজের আবেগ প্রকাশ করেছেন নীরবপত্নী।
গেল শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় আরজে নীরবের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে মানববন্ধন করেছেন তার সহপাঠী, সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি- প্রতিষ্ঠানের অন্যায়ের দায় মালিকপক্ষের, বেতনভুক্ত কর্মচারীর নয়। সেখানে নীরবের নিঃশর্ত মুক্তি চান তার স্ত্রী।
এদিকে নীরবের তিন বছরের মাসুম বাচ্চা বাবাকে দেখতে না পেয়ে কান্নাকাটি করে। বাবার মুক্তির দাবিতে সেও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিল। তার আকুতি, ‘আমি পাপ্পাকে চাই।’
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির তথ্য সামনে আসতেই রীতিমতো সারা-দেশজুড়ে চলছে ব্যাপক শোরগোল। এর আগে ইভ্যালিসহ বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই অভিযান চালিয়ে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।