সাম্প্রতিক সময়ে বাসে নারীদের সাথে খারাপ কাজের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা একের পর এক ঘটে চলেছে, যেটা একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসের মধ্যে বাস শ্রমিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এমন ধরনের ঘটনা যেন থামছে না। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটলো যেখানে এক পথ হারানো নারীর সাথে খারাপ কাজের সময় একজন প্রহরীও প্রয়াত হন।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ বাস টার্মিনাল এলাকায় পথ ভুলে যাওয়া এক কিশোরীকে (২২) বাস থেকে নামানোর পর তাকে খারাপ কাজ করার চেষ্টা করে। ঘটনাটি দেখে টার্মিনালের গার্ড মো. শাহজাহান (৪৮) চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার দেওয়ার একপর্যায়ে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। শুক্রবার (৩ জুন) রাত ৮টার দিকে বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, প্রহরী শাহজাহান জোরে চিৎকার দিয়ে সাহায্য চাইতে হৃদরোগে আ”ক্রান্ত হয়ে হঠাৎ পড়ে যান এবং প্রয়াত হন। খারাপ কাজের চেষ্টার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে গোপনীয়তার স্বার্থে তিনি তার নাম প্রকাশ করেননি।
ভুক্তভোগী ঐ মেয়েটি জানান, নোয়াখালীর চাটখিল থেকে সোনাপুর যাওয়ার জন্য জননী বাসে ওঠেন। রামগঞ্জে পৌঁছে তিনি বুঝতে পারলেন যে, তিনি ভুল জায়গায় এসেছেন। বিষয়টি চালক ও তার সহযোগীকে জানালে তিনি তাকে নোয়াখালী বাসে উঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন এবং ওই বাসে অপেক্ষা করতে বলেন। একপর্যায়ে বাসের দুই যুবক তাকে জোর করে তুলে নিয়ে খারাপ কাজ করার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে চালকের সহযোগীকে মা/’রধ’র করা হয়। তার কাছে থাকা তিন হাজার টাকাও নিয়ে যায় তারা।
থানা পুলিশ ও জননী বাস সার্ভিসের চালকের হেলপার আজাদ হোসেন জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রামগঞ্জের পশ্চিম কাজিরখিল গ্রামের আখন বাড়ির এমরান হোসেন (২৬) ও তার সহযোগীরা জো”রপূর্বক ওই তরুণীকে বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাকে টার্মিনালের পেছনের টয়লেটে নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করার চেষ্টা করে।
টার্মিনালের গার্ড শাহজাহানসহ বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছালে এমরান ও তার সহযোগীরা পা”লিয়ে যায়। এ সময় শাহজাহান চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার প্রয়ান ঘটে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান। শাহজাহান রামগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম কাজীরখিল গ্রামের দেওয়ান বাড়ির বাসিন্দা।
ঘটনাটির বিষয়ে খবর পাওয়ার পর, মামুনুর রশিদ আকন্দ যিনি রামগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র হিসেবে রয়েছেন এবং দিবাকর রায় যিনি রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তারা দুজন ঘটনাস্থলে যান। মেয়েটিকে সেখান থেকে উদ্ধার করার পর তাকে থানায় নিয়ে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র দুঃখ প্রকাশ করেন।