পৃথিবীর ক্লান্তিলগ্নে নোবেল করোনাভাইরাসের হানাতে থমকে গেছে সবকিছু। ক্ষতিগ্রস্ত তালিকার মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থানে আছে শিক্ষাজীবন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দীর্ঘ দেড় বছর যাবত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, ঠিকমতো হচ্ছে না পড়ালেখা ছেলেমেয়েদের। সবকিছু ঠিকঠাক করে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ফিরিয়ে আনার জন্য চলছে শিক্ষা নিয়মের একের পর এক পরিবর্তন। সম্প্রতি বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি চলে যায় অন্যদিকে। শিক্ষার্থীদের মুখের মাস্ক কেন নামানো!
শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার সময় বাচ্চাদের মুখের মাস্ক নামানো দেখে উদ্বেগ জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি সতর্ক করলেন করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিনামূল্যে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একই অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয় এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের হতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী হাততালি দিয়ে উৎসাহ দেন এবং অভিনন্দন জানান। এ সময় প্রাথমিকের কয়েকজন শিক্ষার্থী মুখের মাস্ক নামিয়ে বই নিতে মঞ্চে গেলে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে।
তিনি বলেন, “বাচ্চাদের মাস্ক খুলে রাখছে কেন? এটা তো ঠিক হয়নি। ছোট ছোট বাচ্চাদের কিন্তু (কোভিড) হচ্ছে।”
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন এর দ্রুত বিস্তারের মধ্যে বিভিন্ন দেশে শিশুদের মধ্যেও সংক্রমণ বাড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় ওমিক্রন আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়ে উঠেছে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের দুই ধরন ওমিক্রন আর ডেল্টার কারণে সংক্রমণের যে ‘সুনামি’ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
মহামারীর কারণে নিজ হাতে বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দিতে না পারায় দু্ঃখ প্রকাশ করে অনুষ্ঠানে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন সরকার প্রধান।
মহামারীর কারণে এবারও বছরের প্রথম দিন স্কুলে স্কুলে বই উৎসব হবে না। উৎসব না হলেও ৪ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে যাতে শিক্ষার্থীরা বই পায়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জানান।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নতুন বছরে ৪ কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৬ জন শিক্ষার্থীর হাতে ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ১৩০ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
বর্তমান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা ও। তাইতো প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ এত বেশি। আর তিনি কেনইবা এ কথা বলবেন না, কিছুদিন আগেই তো বাংলাদেশে তৈরি হয়েছিল এক মৃত্যুপুরীতে। এবারের করোনাভাইরাস এর ঝড় ঠেকাতে হলে শিক্ষার্থীদের কে অবশ্যই আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। তাইতো প্রধানমন্ত্রী বলেই বসলেন শিক্ষার্থীদের মাঝে মুখ থেকে নামানো কেন।