দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতার বাহিরে রয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা রাজনীতির মাঠে সরব হতে শুরু করছে। তবে তারা অনেক দিন ধরেই নিরপেক্ষ সরকারে দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সংবিধানের বাহিরে নির্বাচন সম্ভব নয়। এর সমাধান রাজ পথে হবেই বলে জানান দিচ্ছে দুটি দলই। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিএনপি শান্তিপূর্ন আন্দোলনে কোনো বাধা দিয়া হবে না কিন্তু ধ্বংসাত্বক কিছু করলে প্রতিহত করা হবে। বিএনপি নেতাদের পাগলাগারদে পাঠালে মানুষ নিরাপদে থাকবে মন্তব্য করে যা বললেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, গত ১৩ বছরে বিএনপি আন্দোলন করেছে, সরকার বাধা দেয়নি। যখন-তখন তারা যা খুশি তাই বলেছেন, সেগুলো আমরা পাগলের প্রলাপ মনে করে কিছু বলিনি। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, এই পাগলদের বাধতে হবে। এদের পাবনা না পাঠানো পর্যন্ত মানুষ নিরাপদ না।
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খান হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিএনপি জানে নির্বাচনে এলে তাদের পরিণতি কী হবে। তাই তারা নির্বাচনে না গিয়ে জোর করে ক্ষমতায় আসতে চায়। এটা কি সম্ভব? ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো নির্বাচন। আপনারা যদি নির্বাচনে জয়লাভ করেন, তাহলে আমরা আপনাদের সালাম দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেব। আর যদি জোর করে ক্ষমতায় আসতে চাইলে আপনাদের ঘাড় ধরে বের করে দেব।। এটা জোরের জায়গা না, সন্ত্রাসের জায়গা না। আপনি পুলিশের উপর হা/মলা করবেন, তাদের খোচাবেন, ঢিল ছুড়বেন, বো/মা মারবেন, তাহলে পুলিশ কি আঙুল চুষবে?? পুলিশ তাদের কর্তব্য পালন করতে গিয়ে যা খুশি তাই করবে। মানুষের জানমাল রক্ষা করা তাদের পবিত্র দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতে গেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এদেশে আসবেন, এটাই রেওয়াজ। বিএনপি তো গত তিন দিন ধরে কত কথাই বললো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার কাজ ঠিকই আদায় করেছেন। শেখ হাসিনা দেন না, বরং আনেন। দেশের জনগণের জন্য যা দরকার, সেটিই তিনি করেন। এজন্য তিনি কারো সঙ্গে চুল পরিমাণ আপোষ করেন না।
বঙ্গবন্ধু একাডেমির সভাপতি শেখ ইকবাল খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী, সাবেক সদস্য লিয়াকত আলী খান, জাসদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বদেশ বিচিত্রার সম্পাদক অশোক ধর, বাংলাদেশের নারী নেতা ড. বক্তব্য রাখেন কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. সম্পাদক সাদিয়া শারমিন, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার সারোয়ার হোসেন, বঙ্গবন্ধু একাডেমির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি সবসময় পাকিস্তানি ধারায় রাজনীতি করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় নেতাদের ভারতের দালাল বলে অভিহিত করে। এএকইভাবে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য শান্তি চুক্তি করার সময় বিএনপি বলেছিল, ‘ফেনী পর্যন্ত ভারতের অধীনে চলে যাবে।’ এভাবে তারা সবসময় এদেশের মানুষকে ভারত জুজুর ভয় দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে তারা এখনও মিথ্যাচার করছেন। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন ভারত থেকে যা আদায় করা হয়েছে সবই আওয়ামী লীগের আমলে করা হয়েছে। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। আমরা মনে করি তার সফর সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। দেশীয়-আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যম এই সফরকে সফল আখ্যা দিলেও বিএনপি নামক দলটি এ নিয়ে নিরন্তর মিথ্যাচার করে আসছে।
প্রসঙ্গত, দেশকে আবারও অশান্ত করতে পাঁয়তারা করছে বিএনপি বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, বিএনপিকে দেশে নৈরাজ্য করার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না আর।