Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এই ধরনের শর্ত সাপেক্ষে ভিসা প্রদান দেশের জন্য লজ্জাকর আইজিপি প্রসঙ্গে ফখরুল

এই ধরনের শর্ত সাপেক্ষে ভিসা প্রদান দেশের জন্য লজ্জাকর আইজিপি প্রসঙ্গে ফখরুল

সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে। পরে বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘ চিঠি পাঠায় বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশ। তার পরপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ সাবেক ও বর্তমান সাত র‌্যাব কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। বিষয়টি নিয়ে সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। আইজিপি বেনজীর আহমেদ শর্তসাপেক্ষে ভিসা বাংলাদেশের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য করে যা জানালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র শর্ত সাপেক্ষে ভিসা প্রদান করায় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে ভিসা প্রদান বাংলাদেশের জন্য অবমাননাকর।

শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি, এ ধরনের শর্ত সাপেক্ষে ভিসা দেওয়া বাংলাদেশের জন্য অপমানজনক। সরকারের এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। বাংলাদেশে গু/ম, খু/ন, বিচারবহির্ভূত হ/ত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন কর্মকাণ্ডের জন্য র‌্যাব ও র‌্যাবের ৭ কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের পরে জাতিসংঘের পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে বাংলাদেশের ডেলিগেশনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এর নাম রয়েছে। সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকে শর্তসাপেক্ষে ভিসা দেওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘকে যে ডেলিগেশনের তালিকা প্রদান করে, সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। বাংলাদেশের অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার লক্ষ্যে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গু/ম, খু/ন, বিচার বর্হিভূত হ/ত্যাকাণ্ডের মতো ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্দেশদাতাদের একজন বেনজির আহমেদকে এই তালিকাভুক্ত করে সরকার এই সব মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদেরকে বৈধতা প্রদান করার চেষ্টা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শর্ত সাপেক্ষে ভিসা প্রদান করায় উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘের এই নির্দিষ্ট সম্মেলন ব্যতীত অন্য কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাতিসংঘের ১৯৪৭ চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি শুধুমাত্র জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন এবং তার অবস্থান সীমিত থাকবে জাতিসংঘ প্রাঙ্গণে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিসহ দেশের প্রায় সব গণতান্ত্রিক দল এ সরকারের সহিংস আচরণের কথা বলে আসছে। এই সরকার ইতিমধ্যেই আমাদের দেশের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গু/ম করেছে, ক্র/সফায়ারে হ/ত্যা করেছে, গ্রেফতার ও বিচার না করে নির্যাতন করেছে। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, মিটিং-মিছিল করার অধিকার নেই। অনুমতি ছাড়া কোনো সমাবেশ করা যাবে না। গণমাধ্যমগুলোর ওপর একটা সেলফ সেন্সরশিপে বাধ্য করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষের কথা শোনা তো দূরের কথা, জাতিসংঘের মতো বিশ্বের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী সংস্থা বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও তারা কর্ণপাত করছে না। হ/ত্যা, গু/ম-খু/ন তারা চালিয়েই যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশের আইন অনুযায়ী দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের চিহ্নিত করেছে; যারা ক্ষমতাসীনদের হয়ে মানবাধিকার বিরোধী এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।সেই অভিযোগেই আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠান র‌্যাব এর ওপর এবং র‌্যাব ও পুলিশের কয়েকজন ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, ভিসা বাতিল এবং তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।

সর্বশেষ ঘটনা প্রবাহ উল্লেখ করে তিনি বলেন,সরকার তাদের হিংস্র, মানবতাবিরোধী অপতৎপরতা চালিয়েই যাবে বিশ্ব বিবেক ও মতামতকে তোয়াক্কা না করে। ইতিমধ্যেই ভোলায় গু/লিবিদ্ধ হয়ে দুজন, ঢাকা ও কুমিল্লায় পুলিশ হেফাজতে দুজনের মৃ/ত্যু এবং জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, সারাদেশে পুলিশ ও সরকারি দলের হামলার প্রতিবাদে বিএনপির চলমান আন্দোলনই পুলিশ ও সরকারি দলের হামলায় এটাই প্রতীয়মান হয়, সরকারের এই অপরিণামদর্শী ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্তের দায়দায়িত্ব কেবল সরকারকেই বহন করতে হবে। সত্য ও ন্যায়ের পথে জনগণের বিজয় অনিবার্য।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, সরকার জনমত উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের জন্য অপামানজনক বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যারা দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আইনবর্হিভুত কর্মকান্ড করেছে তাদের প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে নিজেদের স্বার্থে।

About Babu

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *