বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার যা খুশি তাই করতে পারবে। কিন্তু এক শ্রেনীর লোক আছে যারা সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার মত সাহস ও বুদ্ধি কোনোটা নেই তবে বড় বড় বুলি দিয়ে থাকে। এই সরকার দেশের দেশের পরিস্থিতি এতটাই নষ্ট করেছে যে সবাই পা চাটতে পছুন্দ করে। নেতৃত্ব দেওয়ার মত সৎ সাহস ও মেধা বর্তমানে নাই বলে মন্তব্য করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। এ বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন পিনাকী ভট্টাচার্য পাঠকের জন্য সেটি হুবাহু তলে ধরা হল নিচে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সবচেয়ে বড় সংকট মেধাশুন্যতা। আপনি পৃথিবীর যেকোন সফল রাজনৈতিক নেতা দেখেন, সেই প্রবল মেধার অধিকারী ছিলো। আপনি লেনিনের লেখাপড়া দেখেন। সে চাইলে পৃথিবীর যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপনা করতে পারতো।
রাজনীতিতে দুটো জিনিস মাস্ট। প্রবল মেধা আর দুর্দান্ত সাহস। এই দুইটা না থাকলে ক্ষমতার লড়াইয়ে জেতার আশা নাই। যে ঝুঁকি নিতে পারেনা সে রাজনৈতিক না।
বাংলাদেশের এলিটেরা ক্ষমতা চায়। কিন্তু মুশকিল হলো; তার প্রবল মেধাও নাই, সাহসও নাই। তাই সে শর্টকাট নেয়।
ধরেন মাহফুজ আনাম আর মতিউর রহমান। এরা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য ওয়ান ইলেভেন করলো। মতিউর রহমান তো বিলিভ করে সে তার পত্রিকা দিয়ে সমাজকে বদলে দেবে। ওইযে দেখেন “বদলে যাও বদলে দাও”। তারপরে আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ। সে মনে করে আলোকিত মানুষ বানায়ে সমাজ পালটে দেবে। আবার দেখেন মামুনুর রশীদ আর গ্রুপ থিয়েটার গং। তারা বিলিভ করতো নাটক দিয়ে তারা শ্রেণী সংগ্রাম করবে। তাদের শ্লোগান হলো, নাটক আসলে শ্রেণী সংগ্রাম তীক্ষ্ণ করার হাতিয়ার। আবার নির্মলেন্দু গুণেরা মনে করলো কবিতা লিখে বিপ্লব করবে। সে লিখলো, “কিন্তু তার আগে চাই সমাজতন্ত্র”। মানে কবিতার মধ্যে সমাজতন্ত্র আর বিপ্লব ঢুকায়ে দিলে সমাজতন্ত্র কায়েম হইয়া যাবে। মোর্শেদরা আর আলমগীর কবীরেরা মনে করলো সিনেমা বানায়ে বিপ্লব করবে। কী মাথা রে বাবা। এরা না বুঝেছে সমাজ, না ক্ষমতা, না রাজনীতি, না শ্রেণী সংগ্রাম। না বিপ্লব। এর ফলে হইছে কী? হইছে আমরা না পারছি পাতে দেয়ার মতো কবিতা লিখতে, সিনেমা বানাইতে, নাটক করতে, সাংবাদিকতা করতে।
এরা যুগে যুগে তরুণদের বিভ্রান্ত করছে। তরুণেরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম এদের কাছে প্রতারিত হইছে। তরুণদের রাজনৈতিক লড়াই সংগ্রাম, সমাজ বদল নিয়া ভুল ধারণা জন্মাইছে। আমি সেইজন্য বাংলাদেশের মানুষদের দোষ দেইনা। দোষ তাদের, যারা যেটা নয় তাদের সেইটা হয়ে বিরাজ করার বাসনাই আসলে দোষী।
সাংবাদিকতা করে, কবিতা লিখে, সিনেমা বানায়ে রাজনৈতিক লড়াই করা যায় না। এগুলো রাজনৈতিক লড়াইকে শক্তি জোগাইতে পারে। কিন্তু এইটা লড়াই না। লড়াই মানে হিম্মত, লড়াই মানে শক্তি প্রয়োগ। লড়াই মানে শত্রুর দুর্বল মুহুর্তে লাখো লাখো জনতার জনস্রোত নিয়ে ক্ষমতাকে ধুলিকনার মতো উড়িয়ে দেয়া। আর অপেক্ষা করা সেই দুর্বল মুহূর্তের মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য। লড়াই মানে রক্তপাত, লড়াই বেদনার, লড়াই নিষ্ঠুর। লড়াইয়ের জন্য বাহুতে শক্তি, বুকে দুর্দমনীয় সাহস, মগজে প্রজ্ঞা আর হৃদয়ে প্রেম লাগে।
প্রসঙ্গত, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি ভয় কাজ করতেছে যেটি সরকার এই ১৩ বছরে ক্ষমতায় থাকার মাধ্যমে তৈরী করেছে। এটি থেকে বের হয়ে আন্দোলনের সংগ্রামের মাধ্যমে সরকারকে হটানোর জন্য যোগ্য নেতৃ্ত্ব প্রয়োজন।