দু/র্নীতি ও অর্থ পাচারের কারনে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হুমকির মুখে। উন্নয়নের নামে সরকার মেগা প্রকল্পগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুপাট হয়ে গেছে কিন্তু বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথা প্রকাশ করা হলে সরকার কর্ণপাত করে না। আর লাগাতার দুর্নীতি ও লু/টপাটের কারনে রিজার্ভ সংকট তৈরী হয়েছে যার প্রভাব বিভিন্ন সেক্টরে পড়ছে বিশেষ করে বিদ্যুৎ সেক্টরে। অথচ বিষয়টি নিয়ে দেশের অর্থনীতিবিদরা কোনো কথাই বলে না।এ প্রসঙ্গে সামাজিক যো/গাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন পিনাকী ভট্টাচার্য পাঠকদের জন্য সেটি হুবহু নিচে দেওয়া হলো।
ইউক্রেনের যু/দ্ধ শুরু হয় এ বছরের ২৪শে ফেব্রুয়ারি। সেদিন থেকে হিসেব করলে আমাদের রিজার্ভ এর ক্ষয় শুরু হয় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে। আমি এর দু মাসের মধ্যেই রিজার্ভ সংকটের বিষয়টি জনসমক্ষে আনি। এ নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে “চুরি হয়ে গেছে রাজকোষ” শিরোনামে আমি একটি ইউটিউব ভিডিও করেছিলাম। তখন কেন, এমনকি তার ৬-৭ মাস পরেও এ বিষয়ে কেউ কিছু বলেননি। এখন অবশ্য অনেকেই মুখ খুলছেন, নানারকম আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করি, “এতদিন কোথায় ছিলেন?” বিশেষ করে আমাদের অর্থনীতিবিদরা জাতিকে প্রবল ভাবে নিরাশ করেছেন। রিজার্ভের রক্তক্ষরণ শুরু হবার পর মাসের পর মাস কেটে গেছে, কিন্তু তাদের কাছ থেকে আমরা কোন সতর্কবার্তা শুনিনি। আজকেও তাদের কেউ কেউ সত্যি কথাটা এড়িয়ে যাচ্ছেন। রিজার্ভ সংকটের একটা বড় কারণ লুণ্ঠন এবং অর্থপাচার, যার সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে বর্তমান ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠী। অথচ দেবপ্রিয় বললেন আমাদের ডলার সংকট নাকি “কাঠামোগত” কারণে। আওয়ামী দুর্বৃত্তপনার উল্লেখটিও করলেন না তিনি। আরেক অর্থনীতিবিদ পিআরআই-এর কর্তাব্যক্তি জায়েদী সাত্তার এ বছর অগাস্টে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার তার লেখা একটি নিবন্ধে বলেছেন বর্ষশেষে বাংলাদেশের রিজার্ভ নাকি ৫০ বিলিয়ান ডলার ছাড়িয়ে যাবে! (#লিংক_কমেন্টে) এসব শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না। অবশ্য পিআরআই-এর কর্ণধারদের কাছ থেকে আমরা এই কিসিমের বিকৃত রসিকতা ছাড়া আর কিইবা আশা করতে পারি? অনেকেই বলেন কুখ্যাত তৌফিক ইমামের বদান্যতায় তার জামাতা সাদেক আহমেদ পিআরআই-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার ভূমিকা পালন করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের কনসালটেন্সি কন্ট্রাক্টের বেনিফিশিয়ারি। তারা এখন বসে আছেন টাকার পাহাড়ের উপর। এরা না হয় সরকারের “মাইনে করা ভৃত্য”, মগজ বন্ধক দিয়েছেন চোর-লুটেরাদের কাছে। কিন্তু বাকিরা? তবে সবাই কিন্তু পচে যাননি কিংবা প্রফেশনাল কর্তব্যে অবহেলা করেননি। উদাহরণ হিসেবে প্রফেসর মইনুল ইসলামের কথা উল্লেখ করতে হয়। রিজার্ভ তথা বাংলাদেশের গভীর অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তিনি সাহসী বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য রেখেছেন ইদানিং। আমি তাকে সাধুবাদ দিই।
লিঙ্কে দেয়া বণিক বার্তার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিদেশি ঋণ ও এল সি পেমেন্ট পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিমাসে দুই বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থেকে বিক্রি করছে। ফলে কয়েক মাসের মধ্যে রিজার্ভের পরিমাণ তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। এটাতো আমি ইতিমধ্যেই প্রেডিক্ট করেছি এবং বলেছি আগামী বছর শুরুতে প্রকৃত রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের কোঠায় নেমে আসবে, যা হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সাত নম্বর বিপদ সংকেত। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী বছরের মাঝামাঝি রিজার্ভের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলারে নেমে যেতে পারে। এটা হবে আমাদের অর্থনীতির জন্য ১০ নম্বর বিপদ সংকেত।
আমরা এক অন্ধকার গভীর খাদের কিনারায় এসে পড়ছি। এ রকম বিপদজনক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদরা যে নিশ্চুপ রইলেন, এবং কেউ কেউ দীর্ঘ বিলম্বে মুখ খুললেও তাদের অনেকেই প্রকৃত সত্যটি বললেন না, এই কথাটি জাতি কিন্তু মনে রাখবে।
প্রসঙ্গত, অনৈতিক সংকটের প্রভাব দেশের সাধারন মানুষের ওপর পড়ে অথচ যার সম্পর্ন দায় সরকারের মন্তব্য করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সরকারের এক শ্রেণীর সুবিধা ভোগী গোষ্ঠী জন্য এমন সুবিধার পথ সুগম করে দিয়েছে যার ফল ভোগ করছে জনগণ।