আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন শেষ নেই আলোচনা-সমালোচনার। একদিকে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মীরা বলছেন, এ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি লুকিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে, আবার অন্যদিকে বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মী দাবি করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
এদিকে গত কয়েকদিন আগেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক জনসভায় বলেছেন, ‘খেলা হবে, রাজপথে হবে, আন্দোলনে হবে, নির্বাচনে হবে, লড়াই হবে। রেডি হও, একটা খেলা হবে। এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, খেলার ডাকে বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা খেলায় রেফারি হলে বিএনপি সেই খেলায় যাবে না।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় দিনাজপুর শহরের ইনস্টিটিউট মাঠে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের হাতে ছাত্রদল নেতা ও স্বচ্ছসেবক দলের নেতা নিহতের প্রতিবাদে পৌর বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকী।
বর্তমান সরকারকে ‘অত্যাচারী সরকার’ আখ্যা দিয়ে সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, যারা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে তারতম্য এবং বৈষম্য করে তারা জালিম। জনগণের করের টাকায় বেতন-ভাতা নিয়ে জনগণের কথা না ভেবে সরকারের কথায় ওঠবস করছে প্রশাসন। সরকারের হুকুম পালন করতে গিয়ে মানুষের ওপর জুলুম করছে। পুলিশ প্রোটেকশন নিয়ে, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে আওয়ামী লীগ সভা-সমাবেশ করতে পারে, সেখানে জনগণের সমস্যা ও সংকট নিয়ে বিএনপি কথা বলতে চাইলে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে হারুন অর রশিদ বলেন, যে কোনো মূল্যে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, “এই দায়িত্ব পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই অনুরোধ করতে দিল্লিতে পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে আজ ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের দিন যাচ্ছে না আর দায়িত্বশীল মন্ত্রী বলছেন দেশের মানুষ স্বর্গে আছে।যারা দেশ নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করেছে তাদের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। ২০২৩ সালে তাদের বিদায়ের ঘণ্টা বাজবে।
হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে এখন অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক সংকট চলছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের দম বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সব মহলে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। সারাদিন পরিশ্রম করে যা আয় হয় তা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারছে না সাধারণ মানুষ।
সংক্রমনের রেশ কাটতে না কাটতেই দিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম হু হু করে বাড়তে থাকায় রীতিমতো নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে।