Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ঋন দিতে বাংলাএদশে আসা আইএমএফ দুই জিনিসের দাম বৃদ্ধি করা নিয়ে জবাব চাইলো সরকারের কাছে

ঋন দিতে বাংলাএদশে আসা আইএমএফ দুই জিনিসের দাম বৃদ্ধি করা নিয়ে জবাব চাইলো সরকারের কাছে

বাংলাদেশে এখন চলছে বড় ধরণের অর্থনৈতিক সংকট।দেশের রিজার্ভ কমে গেছে নাজুক ভাবে।আর এই কারনে সরকারকে এবার দ্বারস্থ হতে হচ্ছে আইএমএফ এর কাছে ঋণের জন্য। আর এই কারণেই আইএমএফ এর একটি দল বাংলাদেশে এসেছে সব কিছু বিচার বিবেচনা করতে। এ দিকে তারা এবার সরকারের কাছে দুই জিনিসের দাম বৃদ্ধি করা নিয়ে জবাব চাইলো। গ্যাসের দাম বাড়ার পরও লোকসান করছে পেট্রোবাংলা। আর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন করলেও তা বাড়ানো হয়নি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এই দুই সরকারি সংস্থা এমন তথ্য দিয়েছে। তাই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে চায় আইএমএফ।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পর এবার আইএমএফ বৈঠক করেছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সঙ্গে। রোববার সকালে বিইআরসি কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পুরো প্রক্রিয়াটি আইএমএফ প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত বিইআরসির একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, মূলত আইএমএফ দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছিল। বিইআরসি কি করে, কিভাবে করে; তারাও এটা জানতে আগ্রহী ছিল। বছরে কতবার দাম নির্ধারণ করা হয়, দুই থেকে তিনবার দাম বাড়ানোর সুযোগ আছে কি না। জবাবে বিইআরসি বলেছে, আইনে একাধিকবার দাম বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আবেদনটি যৌক্তিক হলে গণশুনানির পর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে ভর্তুকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ। জবাবে বিইআরসি বলেছে, ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ সরকারের। কমিশন কাউকে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় না। তারা শুধু আয় এবং ব্যয় নির্ণয় করে এবং ঘাটতি মেটাতে মূল্য নির্ধারণ করে। এরপর সরকার ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তা ঘাটতি বাদ দিয়ে বাকি অংশের দাম বাড়ানো হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) হিসাব করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি বলেছে, প্ল্যান্ট ভাড়া পিডিবির খরচের অংশ। তাই সবসময় হিসাব করা হয়। কোনো পক্ষের উত্থাপিত আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য কমিশনের একটি পৃথক ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। সেখানে শুনানি হয়।

সাংবাদিকরা বিইআরসির গণশুনানিতে যোগ দেন কিনা; আইএমএফ প্রতিনিধি দলের প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি বলেছে, শুধু সাংবাদিকরাই নয়, এ খাতের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষই উপস্থিত রয়েছে।

এতে ভোক্তা প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। দাম না বাড়ায় সরকারকে বিদ্যুৎ খাতে প্রচুর ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে বিইআরসি জানিয়েছে, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর অনুরোধ করেছিল পিডিবি। তবে ভোক্তা পর্যায়ে এর কী প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে তথ্য দেয়নি। এতে অর্থনীতিতে কী ধরনের চাপ পড়বে তা মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই দাম বাড়ানোর চুক্তি থাকলেও কমিশন তা করতে পারেনি।

এছাড়া পেট্রোবাংলার লোকসানের বিষয়ে জানতে চেয়েছে আইএমএফ। জবাবে তাদের বলা হয়, পেট্রোবাংলা ছাড়া গ্যাস খাতের সব কোম্পানিই মুনাফায় রয়েছে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছে পেট্রোবাংলা। এলএনজি আমদানির ব্যয় মূল্যবৃদ্ধির সাথে জড়িত কিনা — আইএমএফের এক প্রশ্নের জবাবে, বিইআরসি বলেছে যে এলএনজি আমদানির ব্যয়কে ফ্যাক্টর করা হয়। এর আগে তারা প্রতিদিন 85 কোটি ঘনফুট আমদানির কথা বলে দাম বাড়িয়েছিল।

কিন্তু তারা অনেক কম গ্যাস এনেছে। এবারও প্রতিদিন ৬৮ কোটি ঘনফুট আমদানি করায় দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন তারা প্রতিদিন ৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট নিয়ে আসছে। তাহলে গ্যাস আমদানি কমানোর ফলে টাকা ছাড় করতে হবে। সেই টাকা কোথায় গেল তার জবাব দিতে হবে পেট্রোবাংলাকে।

গত ৩ নভেম্বর পেট্রোবাংলার সঙ্গে আইএমএফ বৈঠক করে। পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, জুন মাসে একবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে প্রতি ইউনিট (ঘনমিটার) গ্যাস বর্তমানে ৭ থেকে ৮ টাকা লোকসান দিচ্ছে। গত অর্থবছরে (২০২১-২২) পেট্রোবাংলার ঘাটতি ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। সরকার ভর্তুকি দিয়েছে রুপি। আর বাকি ঘাটতি মেটানো হয়েছে এনার্জি সিকিউরিটি ফান্ড থেকে অস্থায়ী ঋণ, গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলোর অর্জিত আয় এবং গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে।

এর আগে গত ২ নভেম্বর পিডিবির সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। তারা পিডিবির কাছে ভর্তুকির পরিবর্তে বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া কমানোর বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। পিডিবি বলেছে, বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া পিডিবির জন্য আরও কঠিন হবে।

গতকাল বিইআরসির সঙ্গে বৈঠকে সংস্থাটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে চার সদস্যের আইএমএফ প্রতিনিধিদল ছিলেন। আর কমিশনের পক্ষে বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিলের নেতৃত্বে সদস্য মকবুল-ইলাহী-চৌধুরী, এবিএম ফারুক, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মো: কামরুজ্জামান ও পরিচালকরা অংশ নেন।

এ দিকে এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। জানা গেছে এ নিয়ে সরকার পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে ব্যাখ্যা। এ বিষয়ে আবদুল জলিল বলেন, আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পুরো প্রক্রিয়া তাদের জানানো হয়েছে।

About Rasel Khalifa

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *