মার্কিন ডলারকে সাধারণত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বের যত মুদ্রা আছে তারমধ্যে মার্কিন ডলারই সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়ে থাকে। মাঝখানে পড়তি অবস্থা গেলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যা গত ৬ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন সুদের হার নতুনভাবে নির্ধারণের আগে শুক্রবার গত ছয়-সপ্তাহের মধ্যে ডলারের এখন সর্বোচ্চ। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা এবং বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার কারণে ডলারের মান বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, গত ছয় সপ্তাহে ডলারের সূচক ছিল সর্বোচ্চ ১০১ দশমিক ৯০, বৃহস্পতিবার তা দাঁড়িয়েছে ১০২ দশমিক ০৯ এ। অর্থাৎ এই সূচক বেড়েছে প্রায় দেড় শতাংশ। গত এপ্রিলের পর থেকে এটির সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থান।
এদিকে চলতি সপ্তাহে ইউরোর মান কমেছে ১ দশমিক ১৮ শতাংশ। রয়টার্সের করা এক জরিপে অর্থনীতিবিদরা আমেরিকায় প্রায় দেড় লাখ চাকরি সংযোজনের আশা করছেন। যেখানে বেকারত্ব চার দশমিক ২ শতাংশ স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডলারের দাম বাড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করে, যেগুলো মূলত অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। প্রথমত, আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা এবং যোগানের ভারসাম্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন কোনো দেশের আমদানি বেশি হয়, তখন ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়, যার ফলে এর দামও বাড়ে।
দ্বিতীয়ত, মুদ্রাস্ফীতি একটি বড় ভূমিকা পালন করে। যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি কম থাকে, তবে ডলার শক্তিশালী হয় এবং অন্যান্য দেশের মুদ্রার তুলনায় এর মূল্য বৃদ্ধি পায়।
তৃতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার বাড়ায়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা বেশি লাভের আশায় ডলারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। এর ফলে ডলারের চাহিদা এবং দাম দুটোই বাড়ে।
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা যুদ্ধের মতো বৈশ্বিক ঘটনাও ডলারের মূল্য বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হতে পারে। এমন অবস্থায় ডলারকে নিরাপদ মুদ্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া, কোনো দেশে যদি বাণিজ্য ঘাটতি (আমদানি বেশি, রপ্তানি কম) থাকে, তবে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায় এবং এর দাম বাড়ে।