পল্লীবন্ধু নামে খ্যাত ছিলেন প্রয়াত রাষ্টপতি ও জাতীয় পাটির ( national party ) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি অত্যন্ত ভদ্র ও বিচক্ষণ ব্যক্তি ছিলেন বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ ( Dr. Zafarullah ) চৌধুরী। বাংলাদেশের গ্রামীন কাঠামো উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিল প্রশংসানীয়। সেজন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি পুল্লীবন্ধু নামে পরিচিত।
তিনি বলেন, এরশাদ মাথা থেকে পা পর্যন্ত একজন সজ্জন ও বুদ্ধিমান ছিলেন। তার দৃষ্টি ছিল প্রশস্ত। ফেব্রুয়ারি মাসেকে কেন্দ্র করে অসামান্য অবদান ছিল তার । সাইনবোর্ড বাংলায় হতে হবে, আদালতের রায় বাংলায় লিখতে হবে এমন নিয়ম করে দেন। তার আমলে কেউ কে না খেয়ে থাকতে হয়নি।
বুধবার (২০ মার্চ) হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ( Hussein Muhammad Ershad ) জন্মদিনে ‘পল্লীবন্ধু’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের মনোনীত আটজনের হাতে পদক তুলে দেন।
প্রথমবারের মতো পল্লীবন্ধু পদক পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। স্বাস্থ্য খাতে অবদানের জন্য তিনি এই পদক পেয়েছেন।
পল্লীবন্ধু পদকপ্রাপ্ত অন্য সাতজন হলেন- সাহিত্যে কবি ফজল সাহাবুদ্দিন (মরণোত্তর), বিশিষ্ট কৃষি সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ ( Sheikh Siraj ), সংগীতে প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ অ্যান্ড্রু কিশোর ( Andrew teenager ) (মরণোত্তর), বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান ( Dr. Nazmul Ahsan ) কলিম। , ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (মরণোত্তর), গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ গোলাম সারওয়ার টিপু এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাবুল।
পল্লীবন্ধু পদক প্রাপ্তদের একটি ক্রেস্ট, একটি প্রশংসাপত্র এবং এক লাখ টাকা সম্মানী প্রদান করা হয়। এছাড়া তাদেরকে উত্তরীয় পোশাকে সম্মানিত করা হয়।
প্রয়াত কবি ফজল সাহাবুদ্দিনের পক্ষে তার মেয়ে দিনা সাহাবুদ্দিন ( Dina Sahabuddin ), এন্ড্রু কিশোরের পক্ষে তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু ( Lipika Andrew ), প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর ( Kamrul Islam Siddiqui ) পক্ষে তার মেয়ে আরিফা কবির ( Arifa Kabir ) এবং শিল্পপতি আব্দুল ওয়াহেদের ( Abdul Waheed ) পক্ষে তার ভাই এম এ রহিম ( MA Rahim ) পদক গ্রহণ করেন। বাবুল। বাকি চারজন নিজ নিজ পদক পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে শাইখ সিরাজ ( Sheikh Siraj ) বলেন, গ্রামীণ উন্নয়নে এরশাদের অবদান অনস্বীকার্য। তার সেই সময়ের কাজগুলো বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অনেক সাহায্য করেছে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে অনেক সময় লাগত, এখন সহজে পণ্য পৌঁছে দিতে পেরে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এতে এরশাদের অবদান রয়েছে।
অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ ( Nazmul Ahsan Kalim Ullah ) বলেন, আমি রংপুরের বেগম ( Begum Rangpur ) রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলাম। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ( Hussein Muhammad Ershad ) কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি। তদবিরে কোনো চিঠি দেননি তিনি।
অনুষ্ঠানে জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কৈশোর থেকে শেষ জীবন পর্যন্ত একজন মেধাবী ছাত্র, মেধাবী খেলোয়াড়, লেখক, কবি, দক্ষ প্রশাসক এবং জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পল্লীবন্ধু পদক-২০২১পুরস্কার প্রদান কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল ( SM Faisal ) চিশতী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু ( Md. Mujibul Haque Chunnu ), কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ( ABM Ruhul Amin Hawladar ), কাজী ফিরোজ রশীদ ( Kazi Firoz Rashid ) প্রমুখ।
প্রসংগত, প্রয়াত রাষ্টপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ( Hussein Muhammad Ershad ) শাসনামলে বাংলাদেশের ( Bangladesh ) অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে দেশে যে উপজেলাগুলোর মাধ্যমে সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে এগুলো তারই অবদান। গ্রামীন অবকাঠামোর উন্নয়নের রুপকার তিনিই ছিলেন। বাংলাদেশ গঠনে অসংখ্য অবদান রেখে গিয়েছেন প্রয়াত রাষ্টপতি এরশাদ।