কিছুদিন আগে অর্থাৎ গত ১৫ জুন শেষ হয়ে গেল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আর এই নির্বাচনে জয়ী হন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতক। অন্যদিকে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন কাজী মনিরুল হক সাক্কু। তবে এই নির্বাচনে আলোচনায় যে ব্যক্তিটি ছিলেন তিনি হলেন সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি নির্বাচনের সময় এলাকাতেই ছিলেন অবশ্য তাকে নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন এলাকা ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করেন। তবে এই বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশন। এবার তিনি জবাব দিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনাররা মাঝে মাঝে ঘাবড়ে গিয়ে থাকেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারকে ‘নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের’ অভিযোগ প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক তাকে বলেন, দুজন নির্বাচন কমিশনার যখন কুমিল্লা সিটিতে গেলেন, তখন তারাও বলেছেন, বাহার আইন ভঙ্গ করেছেন। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আপনারা যখন প্রশ্ন করতে থাকেন তখন উনি কেন আমরাও ঘাবড়িয়ে যাই? আইনকে গাইন বলি। গাইনকে আইন বলে ফেলি। এটা হয়তো আপনারা বলেছেন, আদেশ করেছেন, আদেশ মানছেন না কেন? তিনি হয়তো বলেছেন, ‘তিনি যদি না মেনে থাকেন তাহলে আমরা কী করব!’
সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এ কথা বলেন।
বাহার কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, সিটি কর্পোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা) আসনের সংসদ সদস্য। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বাড়ি কুমিল্লা শহরের মুন্সেফ বাড়িতে।
গত ৮ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বাহাউদ্দিনকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় ইসি। তাকে পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি এলাকা ছাড়েননি। পরে নির্বাচনের দিন তিনি দাবি করেন, নির্বাচন কমিশন তাকে নির্দেশ দিতে পারেনি। কমিশনের চিঠির ভাষা দেখে হতবাক তিনি।
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আজ বলেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একেএম বাহাউদ্দিন কোনো আইন ভাঙেননি। তিনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো নির্দেশনা লঙ্ঘ”ন করেননি। আর ইসিও তাকে কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
ইসির চিঠির শেষে অনুরোধ থাকলেও এলাকা ছাড়ার কথা উল্লেখ করা হলেও এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা অনেক শব্দই ভুল বলতে পারি। তবে শেষ বাক্যে যেখানে বলা হয়েছে, সেখানে আপনাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আপনি একটি অনুরোধ এবং একটি আদেশ মধ্যে পার্থক্য বুঝতে চেষ্টা করবেন।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়ের পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ১৪ জন। এদের মধ্যে ছিলেন এর আগের বারের পরাজিত প্রার্থী সীমা। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে থাকলেও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য তিনি তার পদ ছাড়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন, বলে জানা গেছে। নির্বাচনে জয়ী রিফাত সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারের একজন প্রিয় পাত্র বলে সবাই জানে।