সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে কেন্দ্র আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার সৃষ্টি হয়। তবে তার বক্তব্য দলের নয় বলে আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। তাছাড়া তথ্যমন্ত্রী বলছেন তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নয় তাকে কোন ইখতেয়ার দেওয়া হয়নি আওয়ামীলীগের পক্ষ হয়ে বাহিরের দেশের সাথে কথা বলার। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ নিয়ে যা বললেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ চেয়ে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন নিজেই ব্যাখ্যা দেবেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
রোববার (২১ আগস্ট) নিবন্ধন অধিদপ্তরে জাতির পিতার শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা ওনাকে (পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে) জিজ্ঞাসা করেন। উনি কী বলতে চান, সেটি যেন জনগণের কাছে পরিষ্কার করেন।
আনিসুল হক বলেন, আমি দেশের আইনমন্ত্রী। যদি তাকে (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আইনি নোটিশ দেওয়া হয় তবে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমি কোনো পক্ষকেই ওপিনিয়ন (মতামত) দিয়েছি-বোঝাতে চাই না।
তিনি বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, এটা (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য) আমাদের দলের বা সরকারের নয়। এটা তার ব্যক্তিগত মতামত। আমিও একই সুর মিলিয়ে বলব-এটা উনার ব্যক্তিগত মতামত।
তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আমাদের সঙ্গে আলাপ করে এ বক্তব্য দেননি বলেও মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, রোববার (২১ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এরশাদ হোসেন রাশেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের জন্য আইনি নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য আপনি ভারত সরকারের কাছে যা অনুরোধ করেছেন, এটা আপনি করতে পারেন না। কারণ সংবিধানে বলা আছে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। আপনি সংবিধানবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।আপনি মন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আপনার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, “আমি ভারতে গিয়ে বলেছিলাম শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে যাবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’ মন্ত্রীর এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে সংবিধানবিরোধী যা দেওয়া তার ইখতেয়ারের বাহিরে। সে কারনে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়। তবে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায় এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী।