আগামী শনিবার অর্থাৎ ২৫শে জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের বহুদিনের কাঙ্খিত সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু। এই সেতুর অর্থায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র কম হয়নি, যার মধ্যে প্রথম সারিতে নাম এসেছে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের। তাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা থাকলেও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে এবং তিনি সেটা গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (২২ জুন) সেতু বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
একই দিন বেলা ১১টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন সেতু বিভাগের উপ-সচিব দুলাল চন্দ্র সূত্রধর। কিন্তু রিজভী আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেননি।
আজ বিকেলে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাফ জানিয়ে দেন, তারা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না।
তিনি বলেন, যারা দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মায় ডুবিয়ে দিতে চায়, যিনি দেশের সবচেয়ে মর্যাদাবান এবং সারা বিশ্বে এই দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি সম্মান অর্জন করে আনা ব্যক্তি গোটা পৃথিবীতে যিনি নন্দিত মানুষ, সেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যারা পদ্মায় চুবাতে চেয়েছেন, তাদের আমন্ত্রণে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী যেতে পারেন না।
আমন্ত্রণপত্রে বিএনপির সাত শীর্ষ নেতার নাম উল্লেখ থাকলেও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাম ছিল না।
আমন্ত্রিত বিএনপির শীর্ষ নেতারা হলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র পাস করেছেন তিন সরকারি কর্মকর্তা। কিন্তু আমরা সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করিনি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে ১ টাকার পরিবর্তে ৩ টাকা খরচ হয়েছে, সব টাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের পকেটে গেছে, বিদেশে পাচার হয়েছে। নৈতিকভাবে বিএনপি কোনো অন্যায়কে সমর্থন করে না। সে কারণে এই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু এশিয়ার সর্ববৃহৎ সেতুগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এই সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এলো। এই সেতুর বাস্তবায়নের পর দক্ষিণ অঞ্চলের সাথে উত্তরাঞ্চলের মধ্যে একটি বড় ধরনের সেতুবন্ধন তৈরি হলো, যার কারণে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে এমনটাই জানিয়েছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা।