আলোচিত পদ্মা সেতু তৈরীর নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। আর এই অভিযোগ উঠে বাংলাদেশের সম্মানীয় কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এবং এই কারন দেখিয়ে বিশ্বব্যাংক সেতুর অর্থায়ন থেকে সড়ে দাড়াঁন। পরে সে অভিযোগ প্রমানিত হয়নি তবে এসব বাধাকে অতিক্রম করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সাহসি উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এবার পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রের শিকার সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন সম্পর্কে যা বললেন।
পদ্মা সেতু নির্মাণে ষড়যন্ত্রের শিকার সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনসহ অন্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে সুধী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যের শুরুতে তিনি এ সহমর্মিতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা পর্যায়ে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমার ছোট বোন শেখ রেহানা, তার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, আমার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং কয়েকজন সহকর্মী। তারা চরম মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছিলেন। আমি তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।
সমাবেশে অংশ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর উন্মোচন করেন। শনিবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশ থেকে তিনি এগুলো প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের বুকে সবচেয়ে বড় অবকাঠামোর নাম পদ্মা সেতু। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি ঢাকা বিভাগের মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলাকে সংযুক্ত করেছে। সেতুর তীরের অংশ যোগ করলে মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার। স্টিল ও কংক্রিটের তৈরি দোতলা সেতুটির ওপরে একটি চার লেনের রাস্তা এবং নীচে একটি সিঙ্গেল রেল রয়েছে।
উদ্বোধনের দিন থেকে সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ১২ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করতে পারবে। বিশ্বের খড়স্রোতা নদীর তালিকায় আমাজনের পরেই পদ্মার অবস্থান। তাই সেতুটিকে টেকসই করতে বিশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি উচ্চমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়। পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা ৪২টি এবং স্প্যান ৪১টি। পিলারের নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরতায় স্টিলের পাইল স্থাপন করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৪০ তলা ভবনের উচ্চতার গভীরে পাইল নিয়ে যেতে হয়। পৃথিবীতে আর কোনো সেতুর জন্য এত গভীর পাইলিং হয়নি।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু তৈরীতে পরিকল্পনা পর্যায়ে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ উঠেছিল। পরে সেটি মিথ্যা বলে প্রমানিত হয় আর এই মিথ্যা অভিযোগে যারা হেনস্তার স্বীকার হয়েছিলেন তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী সহমর্মিতা জানিয়েছেন।