নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে অবশেষে গৌরব অর্জন করেছে পদ্মা সেতু। পদ্মার দুই তীর এখন সম্পুর্ন সংযুক্ত। কিন্তু সরকার এই সেতু নির্মাণে ব্যর্থ হবে- এমন বক্তব্য ছড়িয়েছিল শুরু প্রথমে। শুধু তাই নয়, নির্মাণের সময় মানুষের মাথা লাগবে এমন অনেক গুজবও শোনা গিয়েছিলো তৎকালীন সময়ে। আমাজনের পর দ্বিতীয় দ্রুততম নদী পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ কতটা চ্যালেঞ্জিং হবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। আর সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ শতভাগ সফল।
রাত পোহালেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু। অনেক দিনের দেখা স্বপ্ন সত্যি হবে। সেতুর ওপর দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রমত্ত পদ্মা পার হওয়া যায়। পদ্মাপাড়ের আশপাশ থেকে শুরু করে দক্ষিণের ২১টি জেলার মানুষ এ নিয়ে উত্তেজনায় ভাসছেন। তবে এই ঢেউয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিন্তা হচ্ছে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কিছু নির্দেশনা মেনে ব্যবহারকারীদের জন্য কঠোর নিয়ম আরোপ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন এবং সরকার নির্ধারিত টোল সাপেক্ষে ২৬ জুন সকাল ৮টা থেকে পারাপার করা সম্ভব হবে। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য অনুসরণীয় নিয়মাবলীঃ
1. পদ্মা সেতুতে অনুমোদিত গতিসীমা 60 কিমি/ঘন্টা। 2. পদ্মা সেতুতে যে কোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো এবং গাড়ি থেকে নামার সময় ছবি তোলা/হাঁটানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। 3. বিশেষ করে, তিন চাকার যানবাহন (রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, অটোরিকশা, ইত্যাদি), পথচারী, সাইকেল বা অ-মোটর চালিত যানবাহনকে সেতুটি অতিক্রম করতে দেওয়া হবে না। 4. গাড়ির বডির চেয়ে চওড়া এবং 5.6 মিটারের বেশি উঁচু পণ্যসম্ভারের যানবাহন সেতুটি অতিক্রম করতে পারে না। 5. সেতুতে কোন ময়লা ফেলা যাবে না। পদ্মা সেতু অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কাঠামো, তাই জনসাধারণকে উপরোক্ত নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এটি রাস্তা এবং সেতুর ক্ষতি কমাতে নির্ধারিত ওজন সীমা মেনে চলারও আহ্বান জানিয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৭৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। এতে উপকৃত হবেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার তিন কোটি মানুষ।ঊু
উল্লেখ্য, বিশ্ব বিস্মিত যে বাংলাদেশ কোন দাতাদের সাহায্য ছাড়াই দেশের জনগণের খরচে খরস্রোতা নদীর ওপর ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণে সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে এই সেতু নির্মাণে বেশ কয়েকটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। নদী শাসন, পাইল ও বিয়ারিং ব্যবহারে পদ্মা সেতু বিশ্ব রেকর্ড করেছে। সেতু বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।