হাইকোর্টে জামিন পেলেও মুক্তি পাননি বিএনপির অনেক নেতাকর্মী। জামিন পাওয়ার পর নতুন-পুরনো মামলায় আবারও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির। কারাগারের ফটক থেকে গ্রেপ্তারও হচ্ছেন অনেকে। ফলে জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের আন্দোলনের চেয়ে আদালতে হাজিরা ও মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, সাবেক সহ-সভাপতি আলী আকবর চুন্নু, এসএম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. ২য় যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা। শাহীন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বচ্ছসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মোসাব্বির ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর নাসির জামশেদসহ অনেক নেতাকর্মী জামিন পেয়েও মুক্তি পাননি। তাদের আবার নতুন-পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এ ছাড়া গত ৩ সেপ্টেম্বর জামিন পান কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ওমর সানী ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ গোলাম রাব্বি। পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানার চারটি মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ কারণে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়নি।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি মামলায় জামিন পাচ্ছেন। পরবর্তীতে নতুন বা পুরাতন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।অথচ সেই মামলায় আসামি হিসেবে তাদের নাম নেই। মূলত হয়রানি করার জন্যই এগুলো করা হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কারাবন্দি নেতাদের দীর্ঘদিন কারাগারে রাখতে প্রহসনমূলক আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিচ্ছেন না তারা। এখন বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাদের জোর করে কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, নির্বাচন এলেই সরকার এ ষড়যন্ত্র করেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে।
এদিকে এমন গায়েবি মামলার কারণে কারাভোগের আশঙ্কা করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিচার বিভাগে নেতাকর্মীদের হয়রানি দেখতে দেশের বুদ্ধিজীবী ও সম্পাদকদের আদালতের বারান্দায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গিয়ে দেখেন নেতাকর্মীরা কেমন আছেন, কত সাধারণ মানুষ আছেন। যাচ্ছে. তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে! এ ধরনের এখতিয়ার, হাইকোর্টে জামিন দিলে নিম্ন আদালতে তা আবার আটকে দেয়।
তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় একটি সেল তৈরি করেছে, যেখানে দ্রুত রায় দেওয়া যাবে। দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে যারা কাজ করছেন তাদের সবাইকে এক কাতারে শামিল হয়ে আদালতে যেতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে আমার মামলার বিচার শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, আমানের (ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান) মতো আমাকেও আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আন্দোলন করতে হবে। মানে তাদের (সরকার) উদ্দেশ্য খুবই পরিষ্কার। যারা এই সরকারের বিপক্ষে, যারা এই সরকারের পক্ষে নয়, যারা এই সরকারকে বলছে- আপনারা অনেক খারাপ কাজ করেছেন, আপনারা চলে যান, সবাইকে জেলে ঢোকাতে চান এবং তারা দ্রুত এগোচ্ছেন এই লক্ষ্যের দিকে।