অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংগঠনে অমুসলিমদেরও কর্মী হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি হয়তো অনেকেই জানতেন না। আজ সেই অবিশ্বাস্য এবং সত্য ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের অমুসলিম শাখার মাগুরা জেলা সেক্রেটারি উত্তম কুমার বিশ্বাস। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের অমুসলিম কর্মীরা শুধু মাগুরা জেলা শাখাতেই ১৫০০ জন। উত্তম কুমার বিশ্বাস, যিনি একজন অমুসলিম, জামায়াতে ইসলামীতে যুক্ত রয়েছেন। ১৯৮৪ সাল থেকে সরাসরি জামায়াতে ইসলামী সংগঠনের সাথে তিনি যুক্ত। উত্তম কুমার বিশ্বাস বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শ সংগঠন। এই কারণে আমি এই সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছি। এ সংগঠন কোনো সম্প্রদায়িক সংগঠন নয়। ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের এই দুটো অধ্যায় বাদ দিলে সব কিছুই এক। একটি সুন্দর কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে সংগঠন দেশভাগের পর থেকেই এ ভূখণ্ডে কাজ করছে, জামায়াতে ইসলামী যদি এদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, তাহলে এদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। এই কারণেই আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছি।
এটি একটি সুন্দর সংগঠন এবং যারা দায়িত্বে আছেন তারা খুব ভালো মানুষ। জামায়াতে ইসলামী নীতি-নৈতিকতার মূল্যবোধে কোনো ত্রুটি ঘটেনি। জামায়াতে ইসলামী দ্বারা এদেশের সংখ্যালঘুদের কোনো ক্ষতি হয়নি। বিশেষ করে নির্বাচন পূর্বে এবং নির্বাচন পরবর্তীকালে যে সহিংসতা বা বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটেছে—সংখ্যালঘুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজি—এ সব অপরাধে জামায়াতে ইসলামী কোনোভাবে জড়িত নয়। বরং বহু জায়গায় সংগঠনের কর্মীরা রাত জেগে সংখ্যালঘুদের মন্দির এবং উপাসনালয় পাহারা দিয়েছেন এবং তাদের জীবন রক্ষা করেছেন।
উত্তম কুমার বিশ্বাস আরো বলেছেন, আমি মনে করি এই সংগঠন একটি সুন্দর এবং কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম। সেই রাষ্ট্রে বসবাসকারী সকল ধর্মের, বর্ণের এবং গোত্রের মানুষ শান্তিতে তাদের ধর্মীয় সব বিষয় পালন করতে পারবেন। যতদিন ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে রাখবেন, আমি জামায়াতে ইসলামী থেকে সরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখি না। আমি হিন্দু সম্প্রদায় এবং জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে আমার শক্তি এবং সামর্থ্য অনুযায়ী প্রচার চালিয়ে গিয়েছি, এখনও চালাচ্ছি এবং আগামীতেও চালিয়ে যাবো। হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত এবং জামায়াতে ইসলামী সংগঠনে আসা উচিত। আমি ধর্মনিরপেক্ষতার স্লোগানে উদ্বুদ্ধ। দেশে হিন্দুদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা জামায়াতে ইসলামী চায় না। অন্য কোনো সংগঠন থেকে আমাকে ডাকলে আমি বলি, হিন্দু সম্প্রদায়ের আরো অনেকেই আছেন, তাদের ডাকুন, কারণ আমি এখানে ৪০ বছর ধরে আছি এবং এখান থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ আমার কাছে নেই। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ব্যক্তিগত কোনো সংগঠন নয়। ধর্মনিরপেক্ষতার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমার কাছে মনে হয়েছে, এখানকার প্রত্যেক ব্যক্তি আল-আমিন।