বিয়ে মানে আনন্দ, বিয়ে মানে দুটি মন এক সাথে মিলে যাওয়া, বিয়ে মানে সারা জীবন এক সাথে পথ চলার অঙ্গীকার। সারা বিশ্বে নানা ধরনের রীতি বা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। কোথাও পরিবারের সম্মতিতে বা কোথাও নিজেদের পছন্দ মতো বিয়ে করে বর আর কনে। তবে দুই ভাইয়ের বিয়ের ঘটনায় ঈশ্বরদীর একটি এলাকার মানুষের মাঝে বেশ আলোচনা ও কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।
বিয়ে করতে এসেছেন যমজ ভাই সেলিম মাহমুদ ও সুলতান মাহমুদ। এদিকে কনের সাজে বসে আছেন যমজ বোন সাদিয়া ও নাদিয়া। সেলিমের সাথে সাদিয়া এবং সুলতানের সাথে নাদিয়ার বিয়ে হয়েছিল। পাবনার ঈশ্বরদীতে ব্যতিক্রমী এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর দাড়িনারীচা এলাকায় যমজ কনের বাবার বাড়িতে এ বিয়ে হয়। কয়েকশ অতিথির সামনে দেনমোহরে সাড়ে তিন লাখ টাকায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। মানুষ এই জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে দেখতে আগ্রহী। অনেকেই বিয়েতে যমজ বর-কনের সঙ্গে সেলফি তোলেন। এলাকায় এটি একটি ব্যতিক্রমী বিয়ে হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
আজ ঈশ্বরদীতে বরযাত্রী বরযাত্রী, বরযাত্রী সংবর্ধনা ও বিবাহ নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই কনের জন্য হলুদ ও মিষ্টি মুখের আয়োজন করা হয়। বিয়ের দিনগুলোকে প্রাণবন্ত করতে ওই রাতে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাদিয়া নদীয়া শহরের দড়িনারীচা এলাকার কুদ্দুস আলীর মেয়ে। আর সেলিম মাহমুদ ও সুলতান মাহমুদ নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার সাফাপুর ইউনিয়নের কচু পুরী গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে।
কনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কনের বাবা কুদ্দুস আলী ও মা শিল্পী খাতুন এক অনুষ্ঠানে যমজ মেয়েকে একসঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ভাবেননি যে তিনি একসঙ্গে যমজ সন্তান পাবেন। এমন উপহার পেয়ে তারা খুবই খুশি।
যমজ বর বাছাই প্রসঙ্গে কনের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানান, সম্প্রতি তার কাপড়ের দোকানে এক ক্রেতা আসেন। এ সময় যমজ বোনকে দেখে তার খুব ভালো লেগে যায়। পরে তিনি ক্রেতার মাধ্যমে জোড়া হাঁড়ি খুঁজে পান। কুমারের পরিবারের কাছে তদন্ত পাঠানো হয়েছে। একপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ের তারিখ ঠিক হয়।
বরের বাবা সেকেন্দার আলীর বরাত দিয়ে বরের বাবা জানান, বিয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর বরের বাবা পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন। ছেলেদের মা সম্মতি দেন এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তিনি দুই ছেলেকে জানান। তাদের সম্মতি পাওয়ার পর তিনি কনের বাবাকে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা জানান। এরপর উভয় পক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে বিয়ের তারিখ এবং অন্যান্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়।
বর ও কনের নিজ এলাকা ও প্রতিবেশী এলাকা থেকে অনেক উৎসুক মানুষ তাদের দোয়া ( আশীর্বাদ) করতে আসে। উভয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করেন তারা। এই বিয়েতে বর ও কনে সহ উভয় পরিবারের সদস্যরা বেশ আনন্দিত বলে জানান সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিনিধিকে। তাদের বিয়ের এই বিষয়টি নিয়ে ঐ এলাকার অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
খবর বাংলাদেশ প্রতিদিনের।