সরকার নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করছে অভিযোগ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই প্রার্থী। রোববার সকালে বরিশাল নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন।
প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা হলেন- বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ (আমতলী-তালতলা) আসনে খলিলুর রহমান। এসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী রাশেদ খান মেনন (বরিশাল-২), আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫) ও ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু (বরগুনা-১)।
সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি দল ও সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাদের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই। ৭ জানুয়ারি একটি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এখানে শুধুমাত্র একটি লেজুরভিত্তিক দল আছে। আর সেই দলই নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইকবাল হোসেন আরও বলেন, দলের চেয়ারম্যান পরিস্থিতির শিকার।
তিনি বাধ্য হয়েই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনের আর কয়েকদিন বাকি। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
সরকার দলীয় প্রার্থীদের সমালোচনা করে ইকবাল হোসেন বলেন, ‘কমিশন একটি দলের দালালি না করলে সরকার দলীয় প্রার্থীদের পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত।’
ইকবাল হোসেন আরও বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী ও তাদের ডামি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হলফনামা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কেউ কেউ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, যা তারা হলফনামায় উল্লেখ করেননি।
আর বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর তা ছড়ানো হচ্ছে বিদেশে ব্যবসা করছেন। অনেক প্রার্থী তাঁদের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। কেউ স্বর্ণের ভরি দেখিয়েছেন ৫০০ টাকা আবার কেউবা জমির একর দেখিয়েছেন এক হাজার টাকা। এরপর এসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এ কমিশনের ওপর ভরসা করা যায় না।
খলিলুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। তাই সরকার নিয়ন্ত্রিত এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম।’
প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও গতকাল শনিবার পর্যন্ত বরিশালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসকে দেখা যায়নি। রোববার সকালে হঠাৎ করে তিনি বরিশাল নগরীর কালীবাড়ী রোড রজনীগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারে এসে মতবিনিময় সভা করেন। আর ওই বৈঠকেই তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
একই অবস্থা খলিলুর রহমানেরও। নির্বাচনী প্রচারণায়ও তাকে দেখা যায়নি।