কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ বাইতুল হামদ্ জামে মসজিদের ইমাম মিনহাজ আল আদনানকে জুমার নামাজ শেষে ইসকন বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার কারণে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
ইমাম মিনহাজ আল আদনান অভিযোগ করেছেন, গত শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজে খুতবা শেষে তাওহীদ, আকিদা এবং ইমান নিয়ে আলোচনা চলাকালে দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ইসকন নিয়ে কথা বলেন। এরপর মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, এবং হিসাবরক্ষক আবুল হোসেন শমছের তাকে জানান, মসজিদে এ ধরনের আলোচনা নিষিদ্ধ। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের পর রোববার ফজরের নামাজের পর তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মাগুরার বাসিন্দা ইমাম মিনহাজ গত ১ নভেম্বর থেকে আট হাজার টাকা বেতনে মসজিদটিতে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রোববার দুপুরে মসজিদ প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, ইমাম মিনহাজ আল আদনান মসজিদের সামনে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার জুম’আর নামাজে খুতবায় তাওহীদ, আকিদা ও ইমান নিয়ে আলোচনা চলছিল। একপর্যায়ে দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ইসকন নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন তাৎক্ষণিক কেউ কিছু বলেনি। গত শনিবার রাতে মসজিদের সহ সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, হিসাবরক্ষক আবুল হোসেন শমছেরসহ কয়েকজন তাকে বলেন যে, মসজিদে ইসকন ও বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। এ নিয়ে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রোববার ফজরের নামাজের পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন তাকে মসজিদ কমিটি।
তবে মসজিদ কমিটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কমিটির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান, সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, হিসাব রক্ষক আবুল হোসেন শমছের। তারা বলেন, গত ২২ নভেম্বর ইমাম সাহেব মসজিদে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ – সুবিধা নিয়ে প্রকাশ্যে কমিটির বিরুদ্ধে অসৎ বক্তব্য ও আচরণ করেছেন। সে জন্য কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, গত শুক্রবার মসজিদে ইমাম ইসকন নিয়ে কথা বলেছে। তবে এনিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “ইমাম সাহেব বেতন এবং ইসকন বিষয়ে কথা বলেছিলেন। সিংহভাগ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে আমি চাইছিলাম তিনি আরো কয়েক মাস থাকুন।”
এদিকে, স্থানীয় মুসল্লি জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন যে ইসকন নিয়ে আলোচনা করাই ইমামকে চাক্রিচুত্তর করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, “ইমামের চাকরি হারানোর ঘটনাটি জানতে পেরেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”
এ ঘটনার পর ইমামের ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হলে এটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়।