জাতীয় সংগীত কেবল একটি সুর বা গানের লাইনই নয়, এটি একটি জাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের প্রতীক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক দেশ তাদের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সাম্প্রতিক মূল্যবোধ এবং জাতিগত অন্তর্ভুক্তি জোরদার করতে বিভিন্ন পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশেও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনার তীব্রতা বেড়ে উঠেছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সংবিধান পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা থেকে বিরত রাখতে আলোচনা চলছে। একইসাথে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের বিষয়টিও সামনে এসেছে। সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান এবং জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি করেছেন, যা আলোচনা সৃষ্টির কারণ হয়েছে।
এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন। তিনি জানান, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার যে যুদ্ধ চলেছে, তা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, কিছু নতুন সুশীল বুদ্ধিজীবী জাতীয় সংগীত নিয়ে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তার মতে, বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সংগীত থাকা উচিত নয় এবং পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তিনি প্রস্তুত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ভারতের সংশ্লিষ্টতা বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যার মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী জাতীয় সংগীত নিয়ে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছে, যা স্বাধীনতার সাথে সম্পর্কিত নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সংগীত ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে তৈরি হয়েছিল। ইলিয়াস হোসাইন মন্তব্য করেন যে, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা এমন সংগীত স্বাধীনতার চেতনা প্রকাশ করে না।
তার মতে, জাতীয় সংগীত হিসেবে যে কবিতা নির্বাচিত হয়েছে, তা স্বাধীনতার সংগ্রামের সাথে সম্পর্কিত নয়। এই সংগীত পরিবর্তন করা উচিত এবং বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গায় এটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। তিনি দাবি করেন, জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত কোনো ধর্মীয়, জাতিগত বা অপপ্রচারমূলক লেখাকে গ্রহণযোগ্য নয়।