বুধবার (২ অক্টোবর) সিএনএনের তুর্কি ভাষার ইউনিটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তিনি জানান, ইরানের সেই বিশেষ গোয়েন্দা ইউনিট, যা মোসাদ এজেন্টদের শনাক্ত করার কাজে নিয়োজিত ছিল, তার প্রধানই আসলে ডাবল এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০২১ সালে তিনি নিজেই এই তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি আরও প্রায় ২০ জন মোসাদ এজেন্টকে পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ করেছেন আহমাদিনেজাদ।
আহমাদিনেজাদের মতে, এই ডাবল এজেন্টদের মাধ্যমে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এবং গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হয়েছে, যা ইরানের ধারাবাহিক গোয়েন্দা ব্যর্থতার একটি বড় কারণ। তিনি আরও দাবি করেন, এই এজেন্টরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসহ বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে। ২০১৮ সালে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির নথি চুরি করার পেছনেও এই এজেন্টদের ভূমিকা ছিল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই নথিগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন, যা পরে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার প্রেক্ষাপট তৈরি করে।
আহমাদিনেজাদ আরও বলেন, এসব অভিযুক্ত এজেন্ট এখন ইসরায়েলে নিরাপদে বসবাস করছে। তবে এই অভিযোগ সামনে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের পক্ষ থেকেও পাল্টা আক্রমণে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ইরানের প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এর আগেও ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের উত্তেজনা বেড়েছে। সম্প্রতি তেহরানে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকে গুপ্তহত্যা করা হয়। এর আগে, সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের হাতে দুই শীর্ষ ইরানি কমান্ডার নিহত হন। সর্বশেষ, বৈরুতে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েল। এসব হত্যাকাণ্ড ইরান এবং তার সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর অভ্যন্তরে ইসরায়েলের সফল অনুপ্রবেশেরই ইঙ্গিত দেয়।
এতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।