দীর্ঘ সময় ধরে দেশ জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে রয়েছেন অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু আওনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যেম অসংখ্য গ্রাহক প্রতারিত হয়েছে। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এবং মহাব্যবস্থাপককে গ্রে/ফ/তা/র করেছে প্রশাসন। তবে এই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে। এই বিষয়ে ৩ সচিবের নাম প্রস্তাব করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনায় অন্তর্বতীকালীন বোর্ডের জন্য কমিটি গঠনের যে কথা বলেছে হাইকোর্ট সেজন্য তিন সচিবের নাম প্রস্তাব করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা হলেন- ভূমি মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইয়াবুক আলী পাটোয়ারী। এ তিনজনের মধ্যে থেকে একজন বাছাই করে ইভ্যালির অবসায়নের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট পরিচালক কমিটিতে অন্তর্ভূক্তির জন্য সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৩ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার উপসচিব সালমা হাসনায়েন স্বাক্ষরিত এক ই-মেইল বার্তায় এই তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইনজীবী তাপস কান্তি বল। গত ১২ অক্টোবর ইভ্যালির অবসায়নে বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত দেয় হাইকোর্ট। এই বোর্ডে একজন করে সাবেক বিচারপতি, সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট ও আইনজীবী থাকবেন।
শুনানিতে আদালত আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, কোম্পানির দু’জন সদস্য, দু’জনই কা/রা/গা/রে। কীভাবে বোর্ড মিটিং হবে? বোর্ড মিটিং করতে গেলেও তা করা যাচ্ছে না। বোর্ড মিটিং না করতে পারলে টাকা কোথায় কী আছে, সে বিষয়েও জানা যাচ্ছে না। সাবেক বিচারপতি, সচিব ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ চার জন রাখা যেতে পারে। বেসরকারি কোম্পানিতে চার জনের বেশি সদস্যের দরকার নেই। মঙ্গলবার ইভ্যালির বিষয়ে হাইকোর্টে দাখিল করা জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজের যাবতীয় নথি নিয়ে শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেন হাইকোর্ট। ১১ অক্টোবরের মধ্যে জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রারকে আদালতে সব নথি দাখিল করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ে নথি দাখিল করলে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এজন্য একটি নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিবাদীদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। ইভ্যালির একজন গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন আদালত। পণ্য কেনার পাঁচ মাস পরেও সেটি হাতে না পাওয়ায় এক গ্রাহক ইভ্যালি অবসায়ন চেয়ে একটি আবেদন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন ও ইভ্যালিসহ ১১ জনকে বিবাদী করা হয় সেই আবেদনে। ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাট থেকে অ/ভি/যা/ন চালিয়ে গ্রে/প্তা/র করে র্যাব। রি/মা/ন্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তারা বর্তমানে কা/রা/গা/রে রয়েছেন।
ইভ্যালি সহ দেশের বেশ কিছু অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের সাথে বিভিন্ন ধরনের প্রতারনড়া মধ্যে দিয়ে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তবে সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এবং এই সকল অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে গ্রহন করেছে নানা ধরনের পদক্ষেপ।