দেশে জুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে রয়েছে অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালী। তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবং ম হা পরিচালককে গ্রেফতার করেছে প্রশাসন। এবং বর্তমান সময়ে তারা কারাগারে বন্ধি রয়েছেন। তবে এবার তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্ট।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য বোর্ড গঠন করে দেবেন হাইকোর্ট। একজন প্রাক্তন বিচারপতি, সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও আইনজীবীর সমন্বয়ে উক্ত বোর্ড গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চে শুনানিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। আগামীকাল বুধবার আদেশ হবে। এর আগে ইভ্যালির যাবতীয় নথি হাইকোর্টে দাখিল করেছে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ। তবে সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ২০১৯ সাল পর্যন্ত অডিট রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। সোমবার (১১ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসব নথি দাখিল করা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের নথি তলব করেছিলেন আদালত। ১২ অক্টোবরের মধ্যে এসব নথি আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওইদিন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ তলবের আদেশ দিয়েছিলেন। আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব ওইদিন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে গত মে মাসে একটি ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনায় ৩৩ হাজার ৩০৮ টাকার একটি রসিদও দেয়। কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। পণ্য বুঝে পেতে আবেদনকারী যোগাযোগ করলে তাকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি। পরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকারে কয়েকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং হাইকোর্টে কোম্পানিটির অবসায়ন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
বর্তমান সময়ে দেশে বেশ কিছু অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ। এমনকি ইতিমধ্যে বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে দেশ ত্যাগ করেছে। তবে এই সকল প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করেছে সরকার। এমনকি এই সকল প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নীতিমালাও প্রনয়ন করেছে সরকার।