২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে অনলাইন ভিত্তিক ই-কামর্স প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি স্বল্প সময়ে দেশে জুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে। এবং গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে প্রায় সময় নানা ধরনের লোভনীয় অফার দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এই অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমান সময়ে কারাগারে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির এমডি এবং মহাব্যবস্থাপক। সম্প্রতি আদালত এই প্রতিষ্ঠনটি পরিচালনায় ৪ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করে দিয়েছে। এই বোর্ড জীভাবে কাজ করবে এই বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য উঠে এলো প্রকাশ্যে।
দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বোর্ডে যারা আছেন
ইভ্যালির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগকারী ভুক্তভোগীদের আইনজীবী এএম মাসুম জানিয়েছেন, বোর্ডের যে সদস্যরা রয়েছেন তাদের মধ্যে সাবেক বিচারপতি এএইএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন ওএসডিতে থাকা একজন অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন। এছাড়া বোর্ডে আরও রয়েছেন চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ, আইনজীবী শামিম আজিজ। বোর্ডের আর এক সদস্য হলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব করা অবসরপ্রাপ্ত সচিব রেজাউল আহসান। এই দায়িত্ব পালনের জন্য তারা সরকারের কাছ থেকে বেতন পাবেন।
কীভাবে কাজ করবে বোর্ড
এএম মাসুম জানিয়েছেন, “এই বোর্ড শুরুতেই ইভ্যালির অবস্থা সম্পর্কে একটা অডিট করবে। তাদের কাছে দায় দেনার পরিমাণ হিসাব, কত অর্থ তাদের কাছে ভোক্তাদের পাওনা, তাদের কত সম্পদ আছে এই পুরো বিষয়টা অর্থাৎ কোম্পানিটি কী অবস্থায় আছে সেটার একটা খতিয়ান করতে হবে। এজন্য শুরুতেই অডিট করবেন তারা।” যে দেনা রয়েছে ইভ্যালি তা কীভাবে পরিশোধ করবে, কোম্পানিটি আদৌ আর পরিচালনা করা সম্ভব নাকি বন্ধ ঘোষণা করা উচিৎ এসব বিষয়ে অডিটের পর বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।
যদি কোম্পানিটি পরিচালনা করা সম্ভব হয় তাহলে এই বোর্ড সেটি পরিচালনা করবে। পরিচালনা করা সম্ভব না হলে কোম্পানিটি অবসায়ন করে দেওয়া হবে। কোম্পানির বাৎসরিক সভাসহ নিয়মিত বোর্ড পরিচালনা করবে এই কমিটি। “অর্থাৎ যেহেতু ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চেয়ারম্যান কারাগারে রয়েছেন তাই এই কোম্পানিটি পরিচালনা করতে যা যা করতে হয় তার সবই করবে এই বোর্ড।” তিনি জানিয়েছেন ২৩ নভেম্বর এই বোর্ড তাদের প্রাপ্ত তথ্য আদালতে পেশ করবে।
ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠান সহ আরও বেশ কয়েকটি অনলাইন ভিত্তিক ই-কামর্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কাছে থেকে নানা কৌশলে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। তবে সম্প্রতি সকল অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সরকার। এমনকি অনলাইন ভিত্তিক ই-কামর্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে সরকার।