বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় বলতে গেলে একেবারেই দোরগোড়ায়। আর এবারের নির্বাচনে ইসি বেশির ভাগ কেন্দ্রে বা জেলায় ভোট নিতে চাইছেন ইভিএমে। তবে এই ইভিএম নিয়েই এবার বিস্ফোরক তথ্য দিলো আওয়ামীলীগের এক নেতা।
রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে হেরে নিজের ফেসবুক আইডিতে একের পর এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন এজেডএম সেকান্দার আলী মণ্ডল। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী স্বচ্ছসেবক লীগের পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি। সেকেন্দার আলী এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ইভিএম মানে ১০০℅ ভুয়া, যারে খুশি তারেই জেতানো যায়। ‘
গতকাল ১৭ অক্টোবর রংপুর জেলা পরিষদের পঞ্চবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জেলা পরিষদের ৮ নং আসনে (পীরগঞ্জ) তিনিসহ ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সোমবার সকাল ৯টায় পীরগঞ্জ উপজেলা অডিটোরিয়াম হলে রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলে। ২১১ ভোটারের মধ্যে ২০৮ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এ জেড এম সেকান্দার আলী মন্ডল সাধারণ সদস্য পদে বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ ভোট।
অপরদিকে তালা ও চাবি প্রতীকে ৮৩ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে উপজেলা মিঠিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোর্শেদ আলী সরকারের সমর্থকরা তাণ্ডব চালায়।
এদিকে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর সেকেন্দার আলী মন্ডল তার ফেসবুক পেজে ইভিএম বিলম্ব ও ফল প্রকাশের জন্য পরপর ৬টি স্ট্যাটাস দেন। তিনি এক পোস্টে লিখেছেন,‘পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় চোরটার নাম ইভিএম।’
সেকেন্দার আলী মন্ডল আজকার পত্রিকাকে বলেন, এখন আওয়ামী লীগ করা কঠিন। আমি মনে করি আমি আর আওয়ামী লীগ করব না। কারণ আমি আমার জীবন বাজি রেখেছি। আর আওয়ামী লীগের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসা করব।
সেকেন্দার আরও বলেন, ইভিএমে ভোট নেওয়ার পর ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে। এ সময় আমার এজেন্টও প্রতিবাদ করেন। এছাড়া তারা ভোটের ফলাফল পত্র ছাপানোর পরিবর্তে হাতে লেখা ফলাফল পত্র দিয়েছে। আমরা প্রার্থীরা ভোট গণনার সময় থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসার আমাদের থাকতে দেননি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় হবেই। পরাজিত হয়ে ফেসবুকে এলোমেলো কথা লিখে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা ঠিক নয়। যিনি বিতর্কিত কথা লেখেন তিনি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এমন লেখা আমরা আশা করি না।
নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে। কারো কোনো আপত্তি থাকলে তিনি বিধি মোতাবেক আইনি আশ্রয় নিতে পারেন।’
উল্লেখ্য, ওই নেতার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ২০১৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার কাউন্সিলের মাধ্যমে এজেডএম সেকেন্দার আলী মন্ডল সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতেন।