Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ইভিএম মেশিনে ভোট নিয়ে একটি দূর্বলতার কথা জানলেন নির্বাচন কমিশনার

ইভিএম মেশিনে ভোট নিয়ে একটি দূর্বলতার কথা জানলেন নির্বাচন কমিশনার

আলমগীর যিনি নির্বাচন কমিশনার (ইসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে যে সকল ইভিএম মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো নিয়ে অনেকে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেটা কোনোভাবে গ্রহন যোগ্য নয়। এই মেশিনে যে প্রোগ্রামিং করে সেটা অপারেটিং করা হয়েছে, সেটাতে শুধু তথ্য যোগ করতে পারে, কোনো তথ্য মুছে ফেলা সম্ভব নয়। বাইরে থেকে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রন বা অন্য কিছু করা যায় না।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যারা ভোট দেন ইভিএম শুধু তাদের ভোট যোগ করতে পারে অন্য কিছু করতে পারে না। প্রোগ্রামিং সেভাবেই করা হয়েছে। তাই মেশিনে বা বাইরের কেউ কারসাজি করবে এমন কোনো সুযোগ নেই।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মো: আলমগীর বলেন, ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুবিধা হলো নির্বাচনের আগে ও পরে ভোট দেওয়ার সুযোগ বা ভোটার ছাড়া কেউ এসে ভোট দিতে পারবে না। একটা দুর্বলতা আছে যে গোপন বুথে যদি ভোটারকে ঢুকতে না দেওয়া হয়, এই সুযোগটা আছে। কিন্তু ভোটার কেন্দ্রে না এলে সে সুযোগ পাওয়া যাবে না। ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হলে মাত্র ১০ শতাংশ ভোট দেওয়া যাবে। আর ১০ শতাংশ ভোটারের পক্ষে ব্যালটে ১০০ শতাংশ ভোট দেওয়া সম্ভব। এর (ইভিএম) মাধ্যমে জা”লিয়াতির কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন ইভিএম একটি কারচুপির মেশিন। আসলে এখানে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিগত নির্বাচনে আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, ইভিএমে কারচু’পির কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা কারিগরি বিশেষজ্ঞ নই, যারা বিশেষজ্ঞরা তারা বলছেন। আমি দলগুলোকেও ডেকেছিলাম তাদের কারিগরি টিম এনে পরীক্ষা করে দেখার জন্য।

সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রথমেই বলা হয় যে, প্রোগ্রামিং করে ফলাফল উল্টে দেওয়া যেতে পারে। তাই যারা তাত্ত্বিকভাবে বলছেন তারা হয়তো সঠিক। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে তা মোটেও ঠিক নয়। বলতে পারেন যে, কোনো কোম্পানির ওষুধে ভেজাল থাকতে পারে, কিন্তু সব কোম্পানির ওষুধই ভেজাল নয়। মোদ্দা কথা হলো আমাদের ইভিএম একটি ভিন্ন ধরনের ইভিএম। অনেকেই বলছেন এটা ভারতের ইভিএমের মতো। আসলে ভারতের সাথে তুলনা করা উচিৎ না। ভারতে ইভিএমে ভোটার শনাক্তকরণ ম্যানুয়ালি করা হয়। আমাদের ইভিএমে শনাক্তকরণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হয়। আমাদের কাছে ছবি এবং আঙুলের ছাপ সহ ভোটার ডাটাবেস রয়েছে। তাই ভোটার আসলেই এই কেন্দ্রের ভোটার কি না, প্রকৃত ভোটার নাকি অন্য কেউ; এটি মেশিন নিজেই সনাক্ত করে। যা ভারতীয় ইভিএমে করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় কথা হলো, এই ইভিএমে যে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে তা শুধু যোগ করতে পারে। সেখানে থাকা প্রার্থীরা তাদের ভোট যোগ করতে পারবেন। আর কিছু করতে পারে না। প্রোগ্রামিং সেভাবেই করা হয়েছে। তাই মেশিনে বা বাইরের কেউ কারসাজি করবে এমন কোনো সুযোগ নেই। কারণ এতে যে চিপস ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে রাইট করা হয়, এটা হলো ওয়ানটাইম ইউজেবল। তাই একবার লেখা হলে পুনরায় লেখা বা সম্পাদনার সুযোগ নেই।

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর আরো বলেন, আরেকটি বিষয় হলো আমাদের ইভিএম ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত নয়। ব্যালট ইউনিটের সাথে প্রদত্ত সংযোগ কাস্টমাইজযোগ্য। বাজারে কেনা কোনো ক্যাবল, ড্রাইভ- কোনোকিছুই এটার মধ্যে ইনসার্ট করতে পারবেন না। শুধুমাত্র এই ইভিএমের জন্য যে ডিভাইসটি তৈরি করা হয়েছে তা ছাড়া আপনি অন্য কোনো ডিভাইস যোগ করতে পারবেন না।

তিনি বলেন এটি শুধুমাত্র যোগ এবং বিয়োগ. ক্যালকুলেটরের মতো। ক্যালকুলেটর হিসাবে প্রোগ্রাম পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নেই। ইভিএমে আমাদের সে সুযোগ নেই। যারা বলেন ইভিএম নিয়ে ভুল তথ্য আছে, তারা না বুঝে না জেনেই বলেন। তারা চাইলে যেকোনো ইভিএম পরীক্ষা করতে পারে।

এসময় প্রার্থীদের এজেন্টরা নির্বাচনে কা’রচুপি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশি”য়ারি দেন তিনি। নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রার্থীদের এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে কারচুপি বা জালিয়াতিতে সহায়তা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রের বাইরে রাখা যাবে না। কোনো দলই এটা মেনে নেবে না। মশারির ভেতরে মশা ঢুকলে মশারি জ্বালিয়ে কোনো লাভ হবে না, মশা তাড়াতে হবে। একইভাবে কোনো এজেন্ট অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রসংগত, আগামি নির্বাচনে দেশের ১৫০ টি আসনে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করার জন্য সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে এই আসনের সংখ্যা কম বেশি হতে পারে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের বদল হতে পারে বলেও জানিয়েছিল ইসি। এদিকে দেশের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহনের বিপক্ষে কথা বলেছে। যেখানে তারা দাবি করেছে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট কারচুপি সম্ভব।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *