জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, সেই হিসেবে এ বছরের শেষ দিকে কিংবা আগামি বছরের প্রথাম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ দিকে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহন ইভিএম মেশিনে করা হবে কিনা সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে, ইভিএম মেশিন ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে অনুমোদন না দেয়ায় বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কতটি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে এক বৈঠক শেষে তিনি বলেন, কমিশনের কাছে বর্তমানে কতটি ইভিএম আছে, কতটি চালু আছে তা যাচাই-বাছাই করার পর বলা যাবে কতটি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন হবে।”
সিইসি বলেন, ইভিএম প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় কমিশন হতাশ নয়।
তিনি বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকার আরও দুই লাখ ইভিএম কেনার প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
এর আগে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সিইসি বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন না পাওয়ায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে কমিশন পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
গত বছরের অক্টোবরে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ইভিএম ক্রয় ও ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় ইসি।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ইভিএমের বিষয়টি সামনে আসে। বিশেষ করে গত বছরের ৭ মে আওয়ামী লীগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। পরবর্তীতে সর্বোচ্চ দেড়শটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের কাছে বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে এবং তা দিয়ে তারা ৭০ বা ৮০টি আসনে নির্বাচন করতে পারে।
২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার শুরু করলেও কোনো সংসদ নির্বাচনে নয়। ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনও জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেনি। নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি সংশোধন করে এবং ৬টি আসনে ইভিএম ভোটিং পরিচালনা করে।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার কয়েকটি আসনে হয়েছিল গতবার। বাংলাদেশে ভোটের জন্য কাগজের ব্যালট পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছে। তবে স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার এবং বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে কিছু পাইলট প্রকল্প ও আলোচনা হয়েছে। এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন যে কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সম্পর্কে ঘোষণা করার একমাত্র কর্তৃপক্ষ এবং সময়ের সাথে সাথে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।