আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে নির্বাচন ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার কথা নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দলের বৈঠকে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম মেশিনে মাধ্যমে ভোট গ্রহণের বিষয়টি বাতিলের কথা বলেছে। তবে তা সত্বেও নির্বাচন কমিশন ১৫০ টি আসনে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ বিষয়ে সমালোচনা করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনার অন্ধ ও বধির। তিনি শুনতেও পান না, দেখতেও পান না। সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ অধিকাংশ মানুষ ইভিএমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কিন্তু কারও কথা না শুনে তিনি ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা কেন কী উদ্দেশ্যে এমন কাজ করছে আমরা বুঝতে পারছি না।
রোববার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খান মিলনায়তনে ‘জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ইভিএম একটি দুর্বল মেশিন। নির্বাচন কমিশন বলছে, ইভিএমে কারচুপির সুযোগ নেই। সঠিকতা প্রমাণের দায়িত্ব কমিশনের। ইভিএমের নিয়ন্ত্রণ বাইরের কারো হাতে না থাকলেও নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তাদের হাতে। ১৫০টি আসনে ইভিএম দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রতিটি মানুষের আস্থা হারিয়েছে কমিশন।
তিনি আরও বলেন, নতুন ইভিএম কিনতে অর্ধ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। অন্যদিকে, আমরা বর্তমানে চরম সংকটের মধ্যে আছি। সংকট নিরসনে ৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছেন। এ অবস্থায় এটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত আমার বোধগম্য নয়।
সুজন সম্পাদক বলেন, আমাদের শঙ্কা নির্বাচন কমিশনের সততা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি নিয়ে।
প্রবন্ধের উপস্থাপনায়, প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়ব বলেন, ইভিএমের অন্যান্য দিক ডিজিটাল হলেও ফলাফল তৈরির প্রক্রিয়া ডিজিটাল নয়। ম্যানুয়াল হওয়ার কারণে অস্বচ্ছতা এবং ম্যানিপুলেশনের সুযোগ রয়েছে। কমিশনের মাত্র ৭০-৭৫ আসনের ইভিএম নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা রয়েছে। এই অর্থনৈতিক সংকটে নতুন ইভিএম কিনতে ডলার খরচ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, নিখুঁত বায়োমেট্রিক্স ও এনআইডির সমস্যার কারণে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না। মাত্র এক বছরে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এ সমস্যা মেশিনের নয়, বরং সঠিক ডেটাবেজ সমস্যা।
সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোই নির্বাচনে সহায়তা করে। বিশ্বের ১৭৮টি দেশ, যারা আমি যতদূর জানি ইভিএমের পক্ষে, সেখানে স্বৈরশাসক সরকার নেই।
উল্লেখ্য, এত নেতিবাচকতা সত্ত্বেও কেন নির্বাচন কমিশন ১৫০ টি আসনে ইভিএম মেশিন এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা এখন অনেকের মনে প্রশ্ন। এদিকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সকল ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলেছেন। তবে এখন দেখার অপেক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়।