সাম্প্রতিক সময়ে এক আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর ওই এলাকায় নির্বাচন স্থগিত করে দেয়া হয়। এ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে। ইভিএমে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করায় কেমন ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার নির্বাচন কমিশন। ঐ নেতার বক্তব্য কতটুকু সত্য সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তন্তেরকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার গোপনীয়তার কথা বলা এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় এ স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
সোমবার (২৫ জুলাই) পটুয়াখালী জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইভিএমে ভোট নিয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক রাসেলের বিতর্কিত বক্তব্য রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে”সবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় তেঁতেরকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় এক উঠান বৈঠকে জোবায়দুল হক রাসেল এ বক্তব্য দেন। এ সময় তার পাশে বসেছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুক।
ফে”সবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে জোবায়দুল হক রাসেল বলেন, ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। অতএব ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, টেনশনেরও কিছু নাই।’
আওয়ামী লীগ নেতার এ বক্তব্য নিয়ে সর্ব মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। নির্বাচনী কর্মকর্তারাও বিব্রত বোধ করছেন।
এর আগে নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়নের সুলতানাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তালুকদার মোঃ জাহাঙ্গীরও বিতর্কিত বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। ‘আপনাদের দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। যেহেতু বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে, তাহলে আপনি যদি সেই দলের সমর্থক হন, তাহলে আপনিও তো নির্বাচন বর্জন করেছেন। আর নৌকা প্রতীকে কিছুতেই ভোট দেবেন না মনে করলে ইব্রাহিম ফারুককে পরাজিত করতে হবে যদি এটা মনে করেন, নৌকাকে ঠেকাতে হবে এটা ভাবেন। তাহলে একটা কথা পরিষ্কার করে দেবো, আর ভোটের মাত্র তিন-চার দিন আছে। যে সব বন্ধুরা নৌকায় ভোট দিবেন না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন, তাদের ভোটের দিন কাছাকাছি দেখতে চাই না।’
আবি শাহানুর খান যিনি নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন, তিনি গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে জানান, ইভিএমে ভোটগ্রহন নিয়ে অভিনেতা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে এমনটা ধারণা করা হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেজন্য নির্বাচন কমিশন সেখানকার নির্বাচন স্থগিত করার আদেশ দিয়েছেন।