ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জয়ী হলেও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু জিততে পারেননি। কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে নৌকা প্রতীকের এই হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ২৩ হাজার ৩৫৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। জাসদ নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ তাদের হারিয়েছে। ট্রাক প্রতীকে কামরুল পেয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৯৯ ভোট। আর নৌকার পক্ষে ইনু পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। এদিকে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার গোলাপনগরের বাসায় এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ইনু বলেন- কুষ্টিয়া-২ আসনে সুপরিকল্পিত কারচুপি হয়েছে। প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় পরাজিত হয়েছি।
কুষ্টিয়া-২ আসনে টানা তিনবার এমপি ছিলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। 2008 সালে, 14-দলীয় জোটের প্রার্থী জোট হিসাবে ভোট দিয়ে প্রথম জয়লাভ করেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও জাসদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আওয়ামী লীগ নেতারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, ইনু বা জাসদ নেতাদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সমন্বয় নেই। সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনাও ঘটেছে। হাসানুল হক ইনু বলতেন, আওয়ামী লীগের ৮০ পয়সা আমাদের (পার্টনার পার্টির) ২০ পয়সায় যোগ হলে তা ১০০ পয়সা হয়। ৮০ পয়সার মালিক আওয়ামী লীগের নেতারা তার কথায় আর কোনো ছাড় দিতে রাজি হননি। মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আরেফিন বলেন, তারা (জাসদ) আমাদের ভোটে জিতেছে, নির্যাতন করেছে। এ কারণে আওয়ামী লীগের ভোটাররা কামরুলকে ভোট দিয়েছেন। তিনি মিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। কামরুল নিজেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কামারুল থেকে ভোট দিয়েছেন। যার কারণে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া ভোট পেয়েছেন কামারুল।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে কোন্দলের কারণে এ দুই উপজেলায় মূলধারার বিপক্ষে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা ইনুর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তারা কিছু ভোট আকৃষ্ট করলেও ইনুককে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে পারেনি।
রহস্যময় নীরবতায় পরিকল্পিত কারচুপি হয়েছে- ইনু : কুষ্টিয়া-২ আসনে নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, অত্যন্ত পরিকল্পিত কারচুপি হয়েছে। প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় পরাজিত হয়েছি। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার গোলাপনগর নিজ বাসায় টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইনু এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, মাস্তান-কালোটাকার বিস্তার ও প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতার কারণে এখানে আমি পরাজিত হয়েছি। প্রশাসনের পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে পরে ভাববেন বলেও জানান ইনু।