দেরীতে হলেও মেট্রো রেলের যুগে অবশেষে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। এ দিকে এই মেট্রো রেলের চালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে একজন নারীকে। ইতিহাসের পাতায় উঠে গেছেন তিনি। বলছিলাম নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী মরিয়ম আফিজার কথা।
দেশের প্রথম মেট্রো রেলের চালক দলে নিয়োগ পেয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মরিয়ম আফিজা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। মরিয়ম আফিজাকে যে পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাকে বলা হয় ‘ট্রেন অপারেটর’। মরিয়মকে ২ নভেম্বর, ২০২১-এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এই পদে মোট ২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর। জাইকার প্রেসিডেন্ট আকিহিকো তানাকা সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোরেল (লাইন-৬) পরিদর্শনের পর মরিয়ম আফিজাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মরিয়ম ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের হালিশহরে বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ঢাকায় ফিরে আরও চার মাস প্রশিক্ষণ নেন। বর্তমানে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল ডিপোতে কারিগরি ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এখানে মেট্রোরেল প্রস্তুতকারক জাপানের মিৎসুবিশি-কাওয়াসাকি কোম্পানির বিশেষজ্ঞরা ট্রেন পরিচালনায় কারিগরি ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এরপর তিনি দিল্লি মেট্রোরেল একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেবেন। প্রয়োজনে জাপানে ট্রেন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ।
মরিয়ম আগ্রহের বাইরে দেশের প্রথম মেট্রোরেলে চাকরির জন্য আবেদন করেন। তিনি বলেন, মেট্রোরেল আমার কাছে অনেকের মতো স্বপ্ন। আমি নিজেই ট্রেন চালাতে যাচ্ছি – I’m feel pretty happy right now এখন মূল লক্ষ্য হল সমস্ত প্রশিক্ষণ সঠিকভাবে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করা। মেট্রোরেল প্রকল্পের অর্থায়ন করছে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয় আগস্ট ২০১৭ সালে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য দায়ী।
প্রসঙ্গত, দেশে মেট্রো রেলের মেগা প্রজেক্ট শুরু হয় অনেক আগেই। আর এই লক্ষ্যে এখনো কাজ চলছে। জানা গেছে খুব শিঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে এই মেট্রো রেল। মেট্রো রেলের রুট হিসেবে জানা গেছে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২০.১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে উত্তরা-আগারগাঁও সেকশনটি ১৬ ডিসেম্বর খোলার কথা রয়েছে। এই রুটে মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে আগারগাঁও-মতিঝিল সেকশনে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। এ রুটে স্টেশনের সংখ্যা ৭টি। আগারগাঁও পর্যন্ত স্টেশন নির্মাণসহ সব কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকায় মেট্রোরেলের ১৪টি সেট (এক সেটে ছয়টি কোচ) রয়েছে। এগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে।