Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ইতালিতে নাগরিকত্ব হারালেন শত শত বাংলাদেশী, জানা গেল কারণ

ইতালিতে নাগরিকত্ব হারালেন শত শত বাংলাদেশী, জানা গেল কারণ

বাংলাদেশের ( Bangladesh ) অনেক নাগরিক মাঝে মধ্যে বিদেশে যেতে নানা ধরনের প্রতারণামূলক প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়ে থাকে। যার কারণে পরবর্তীতে বিপাকে পড়েন তারা নিজেরাই। অনেক সময় দালালের মাধ্যমে বা এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে এমন ধরনের প্রতারণামূলক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ফলে অনেক বিদেশ যাত্রী সমস্যায় পড়েন। সম্প্রতি এমনই একটি বিষয় উঠে এসেছে যার কারনে ইতালির ( Italian ) নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন অনেক বাংলাদেশী প্রবাসী।

জানা যায়, নাগরিকত্বের জন্য যে আবেদন করা হয় তাতে বিভিন্ন রকম জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার কারণে এখন শত শত বাংলাদেশি হারাতে বসেছেন ইতালির নাগরিকত্ব।

পরিস্থিতিটা বর্তমানে এমন হয়েছে: ইতালিতে বসবাসকারী একজন বাংলাদেশী ২০১৮ সালে ইতালির নাগরিকত্ব পান। নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তিনি সপরিবারে ব্রিটেনে চলে যান। চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি ব্যক্তিগত কাজে ইতালি যান। ফেরার সময় তার পাসপোর্ট ইতালীয় ইমিগ্রেশন বাজেয়াপ্ত করে। যেহেতু তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সময় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন, তিনি ঘু”ষ দিয়ে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে সফল হন। এখন তার পুরো পরিবার ব্রিটেনে বড় ধরনের বিপাকে পড়েছে এবং তিনি আটকা পড়েছেন ইতালিতে! তিনি ২০১৬ সালের এপ্রিলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন।

অন্তত ২ হাজার বাংলাদেশি এমন সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছেন; এদের মধ্যে অন্তত ৪০০-৫০০ বাংলাদেশি রয়েছেন যারা ব্রিটেনে আসা ইতালীয় প্রবাসী।

ইতালির রাজধানী রোমের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস থেকে ২০ জুলাই, ২০২০ তারিখে জারি করা একটি চিঠির অনুলিপি দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের নিকট পৌঁছেছে। এ চিঠিতে ১০ জনের একটি প্রতারক চক্রের নাম প্রকাশ করা হয়েছে; এদের মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও বাইরের দালাল। চিঠিতে ৪৬টি পাসপোর্ট আবেদনের রেফারেন্স নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।

ইতালির বিভিন্ন শহর থেকে এরকম আরও বেশ কিছু চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ রকম আরও বেশ কিছু চিঠি ইতালির বিভিন্ন শহর থেকে ইস্যু করা হয়েছে। সে চিঠিতে উল্লেখ আছে- ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪৮৬টি আবেদনের রেফারেন্স নম্বর দেওয়া আছে। এ ৪৮৬ পাসপোর্ট আবেদনের তদন্ত হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত।

মূলত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের আগে এ নাগরিকত্ব বাতিলের চিঠি দেওয়া হলেও নতুন করে আবারও গত দুই মাস থেকে এ চিঠি দেওয়া হচ্ছে। গোলাম মাওলা টিপু, ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী, এবং একজন ব্রিটিশ প্রবাসী এবং ব্রিটেনে ইতালীয় দূতাবাসের প্রবাসী রাজনীতিবিদ কমিটির ১৬ সদস্যের একজন, তিনি বলেছেন, “দুই থেকে আড়াই হাজার লোকের নাগরিকত্ব বাতিল করা যেতে পারে; এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কয়েক ডজন লোক চিঠি নিয়ে এসেছেন। এটাকে অবহেলা করা উচিত নয়।’ গোলাম মাওলা টিপু বলেন, ‘ইতালি থেকে ব্রিটেনে আসা অনেক বাংলাদেশি নিবন্ধন করেননি। ইতালীয় দূতাবাস, যার অর্থ তারা এখনও ইতালি সরকারের অংশ হিসাবে ইতালিতে রয়েছেন।

এদের মধ্যে যারা জালিয়াতি করেছিলেন তাদের অনেকেই আছেন। ইতালি সরকার ইতালিতে তাদের কাছে চিঠি পাঠালেও চিঠির কথা অনেকেই জানতেন না। তিনি বলেন, ‘ইতালিতে যাওয়ার পর এখন পাসপোর্ট আটকে রাখা হচ্ছে। এখন যাদের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হচ্ছে তাদের বৈধ হওয়ার ১০ বছর পর আবার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে।”

ইতালিতে বসবাসরত সাংবাদিক সোহেল মজুমদার বলেন, ‘সময় বাঁচানোর জন্য বা অলসতার কারনে অনেকেই দালালদের শরণাপন্ন হয়ে এমন বিপদ ডেকে এনেছেন।’ গোলাম মাওলা টিপু যোগ করেন এই বলে যে, এই ঘটনার সাথে জড়িতদের এখন যৌথভাবে একজন দক্ষ মূলধারার আইনজীবী নিয়োগ করা উচিত, যিনি ইতালীয় আইন বোঝেন। তা না হলে সামনে আরও বিপদ হতে পারে।’

প্রসংগত, এই ধরনের সমস্যায় পড়া ইতালি প্রবাসীরা যাতে সমাধান পান, তার জন্য এখানে এখনই দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তা না হলে বিপাকে পড়তে পারে আরো অনেকে। ইতালির নাগরিকত্ব হারাতে বসেছে এমন অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন যার সমাধান চান তারা অচিরেই।

About bisso Jit

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *