বর্তমানে ইডেন কলেজে চলছে পালায় পালায় সংঘর্ষ। ইডেন কলেজের এই ঘটনা সম্প্রতি যোগাযোগ মাধ্যমের শীর্ষস্থানে রয়েছে। কারণ এই সংঘর্ষের দ্বারা কলেজটির হোস্টেল সম্পর্কে একে একে বেরিয়ে আসতে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। ইডেন কলেজের সুন্দর ছাত্রীদের দিয়ে বাজে ব্যবসা করাতো কলেজটির ছাত্রলীগের সভাপতি এমন অভিযোগ করেছেন ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ও তার দলের লোকেরা।
এ বিষয়ে ইডেন কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী গণমাধ্যমকে বলেন, মেয়েরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার সময় সভাপতির অনুসারীরা তাদের ছবি তোলেন। সেখান থেকে বেছে নেওয়া হয় কোন মেয়ে সুন্দরী।
এরপর মেয়েদের রুমে নিয়ে গিয়ে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। অসৎ উদ্দেশ্যে তাদের কাছে বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে এক মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে এ নিয়ে বক্তব্য দেন।
বৈশাখী আরো বলেন, এর আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। ওরা আমাদের ঘর থেকে মেয়েদের নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু মেয়েরা তাদের কাছে নিরাপদ বোধ করে না। কারণ তারা ওইসব মেয়েদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতে চায়।
শনিবার মধ্যরাতে ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর করেন কলেজ শাখার সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। মারধরের পর রাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। আর এই ঘটনার পরই ফাঁস হয় বিস্ফোরক তথ্য। আধিপত্য বিস্তার, আসন বাণিজ্য, সাধারণ ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করার ঘটনাও সামনে এসেছে।
পরে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয় একের পর এক অভিযোগ। ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে আমন্ত্রিত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগের একাংশ। ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী গণমাধ্যমের কাছে সভাপতি-সম্পাদককে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তার এই মন্তব্যের পরে গণমাধ্যমকর্মী তাকে প্রশ্ন করেন, তাদের দিয়ে যে সকল ব্যবসা করানো হতো এদের গ্রাহক কারা? তারা কি বহিরাগত কোন স্কুল কলেজের ছাত্র, রাজনীতিবিদ না অন্য কেউ? কারা ছিল তাদের গ্রাহক? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেনি আন্দোলন ছাত্রীদের মধ্যে কেউ।
এরপরও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল বিতর্ক। কিছুদিন আগে তার গালিগালাজের একটি অডিও মিডিয়ায় ফাঁস হয়। যদিও পরে তিনি এ জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই দুই শিক্ষার্থীকে ফাঁস করে ভিডিও ভাইরাল করার হু/মকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে রিভার বিরুদ্ধে।
কয়েকদিন পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইডেন কলেজ। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনার অডিও ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেককেই এর জন্য ক্ষমা চাইতে দেখা গেছে। অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে/সবুকে ভাইরাল হওয়া সব ছবি ও কথা দেশের অন্যতম শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে কোনোভাবেই আশা করা যায় না। এখানে জিনিস, শরীরের ব্যবসা সভাপতি চান না। এটা সত্যিই দুঃখজনক ও দুঃখজনক যে হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেখানে অধ্যয়ন করছে এবং নিরাপত্তার জন্য হোস্টেলে অবস্থান করছে। কিন্তু এখানে যদি ছাত্রীদের প’’তিতা বানানো হয়। তাহলে এটা কি ইঙ্গিত করে তা জনগণের প্রশ্ন। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এই বক্তব্যের সমালোচনা বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে কার জন্য এই দেহ ব্যবসা? আর সভাপতি ও সেক্রেটারি কে সরবরাহ করেন সেটা ভাবনার বিষয়। এসবের কাস্টমারাইবা কারা । এসব বিষয় যদি পুরোপুরি নির্মূল করা না হয়, তাহলে এ ধরনের স্কুলকে কলঙ্কিত করা ঠিক হবে না।
সহ-সভাপতি জান্নাতুলকে প্রহারের পর থেকে ইডেন কলেজে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই রাত থেকে পলাতক ছিলেন ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি। তার ঠিক পরের দিন অর্থাৎ গতকাল ২৫/০৯/২০২২ সন্ধ্যায় নিজের দলীয় লোকদের নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন তিনি। কলেজে প্রবেশ করার মাত্রই গণমাধ্যম ঘিরে ধরে থাকে এরপর এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন তিনি। গণমাধ্যম এর সাক্ষাৎকার দেওয়াকালে সহ-সভাপতি জান্নাতুলের দলীয় লোকেরা তাদের উপর আক্রমণ করে। এ সংঘর্ষে সভাপতিসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।