প্রতিভা যদি কারো মধ্যে থাকে সেটাকে কখনো চাপা দেওয়া যায় না। সেটা সামনে এসে একসময় স্বপ্ন পূরণ করে থাকে। যেটার কোনো সীমাবদ্ধতার সীমায় ধরে রাখা যায় না। প্রতিভা দেশ বা কালের বন্ধন মানে না। সেই চিরায়ত কথা যেন সত্য হলো দরিদ্র পরিবারের সন্তান আরিফ শেখের জীবনে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি দুর্গম গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান আরিফ, এই ছোট্ট ছেলেটি গ্রীকের মাটিতে সেরা অভিনেতার তকমা পেয়ে গেল।
আরিফের বাবা পেশায় একজন ইটভাটা এবং তার মা গৃহিণী। ৯ বছর বয়সী শ্যামবর্ণা আরিফ ছাড়া তাদের পরিবারের কেউ কখনো স্কুলে যায়নি। অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান আরিফের ইচ্ছে ছিল অভিনেতা হওয়ার। সেই সুযোগ এল প্রসূন চ্যাটার্জির মাধ্যমে। আরিফ ‘দোস্তজী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার স্বপ্ন পূরণ করতে শুরু করে। ২৪তম অলিম্পিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা শি’শু অভিনয়ের (পুরুষ) পুরস্কার জিতে নিয়েছে আরিফ। কিন্তু আরিফকে কোথা থেকে আবিষ্কার করলেন পরিচালক?
প্রসূন জানিয়েছেন, সফিকুলের চরিত্রে তারা গড়পড়তা শিশুশিল্পীদের তুলনায় একটু আলাদা মুখ খুঁজছিলেন। সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই মুখ খুঁজেছেন প্রসূন। কিন্তু সে নিজেই একদিন এলো তার সৃষ্টিকর্তার কাছে। প্রসূন সেদিন কলকাতা ফিরে যাবেন। হঠাৎই ৯ বছরের একটি ছোট্ট ছেলে রেগেমেগে তার ঘরে এসে ঢুকল। ঘরে ঢুকেই তার প্রশ্ন, এখানে ছবি হচ্ছে কি না! ছবি হচ্ছে শুনেই অকুতোভয় বালক বলল, পরিচালককে ডেকে দিতে।
প্রসূন জানিয়েছিলেন, তিনিই পরিচালক। কিন্তু ছেলে বলেই দিল, প্রসূনকে দেখে তার পরিচালক বলে মনে হচ্ছে না। অপরদিকে প্রসূন পেয়ে গেলেন সফিকুলকে। শুরু হলো শুটিং। ধুলোমাখা পথ পেরিয়ে শুরু হলো আরিফের জার্নি। সেরা অভিনেতার তকমা সবে তো শুরু, এখনো যে অনেক পথ বাকি।
লেখক এবং পরিচালক প্রসূন চ্যাটার্জি তার সিনেমায় বাংলার একটি সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত গ্রামে বন্ধুত্ব, ক্ষতি এবং তা থেকে কাটিয়ে ওঠার বিষয় তুলে ধরেছেন এই ছবিতে। মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল গ্রামের দুই ছেলের নিষ্পাপ বন্ধুত্বকে তার এই সিনেমায় তুলে ধরেছেন। এই ছবিটি বাবরি মসজিদ ধ্বং’/স এবং পরবর্তী বোম্বে ব্লাস্টের পরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে। ছবিটি ইতিমধ্যে দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।