বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির ‘অবনতি’ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সংগঠনের সভাপতি এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষ করে ‘অধিকারের বিরুদ্ধে মামলা’ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। বিষয়টি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নজরে এসেছে। এই প্রস্তাবে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ, এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা, যা অপ্রত্যাশিত ও অন্যায্য।
সরকার ইউরোপীয় সংসদের যৌথ প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছে
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এটি উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে আদালত বিদ্যমান আইন অনুসরণ করে এবং বাস্তব প্রমাণের ভিত্তিতে নিরপেক্ষভাবে এবং নিষ্ঠার সাথে মামলা পরিচালনা করেছেন। কোনো বহিরাগত উত্স থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব ছাড়াই এই রায় দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বাংলাদেশের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে চলছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়, বিচারিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে নির্বাহী কার্যক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নগ্ন হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার একটি মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিনকে (এলান) দুই বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত। ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।
একই দিনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এতে আদিলুর ও নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের নিন্দা জানানো হয়। পাশাপাশি অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।