ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বেফাঁস বক্তব্য প্রদানের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ হতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে আওয়ামী লীগের প্যাডে লেখা একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়৷ উক্ত স্মারকলিপিতে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ সর্বমোট ৬ টি বানান ভুল লেখা হয়েছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি এই স্মারকলিপি হস্তান্তরিত করা হলে পরবর্তীতে সন্ধ্যায় এটির কপি সংবাদমাধ্যম কর্মীদের নিকট পৌঁছালে তা বিভিন্ন ভাবে প্রকাশিত হলে তা সকলের দৃষ্টিগোচর হয়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই স্বাক্ষরিত ওই স্মারকলিপির বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ভুল বানানের শব্দে-ভরা ওই স্মারকলিপিতে তিনি কীভাবে স্বাক্ষর করলেন? এটি তিনি পড়েছেন কি না? নাকি না পড়েই স্বাক্ষর করেছেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে। তবে ওই স্মারকলিপিতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদলের কোনো স্বাক্ষর নেই। সভাপতি আবদুল হাই একাই স্বাক্ষর করেছেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এই স্মারকলিপিটি দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল হাই, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা কমিটর সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান বাচ্চু, মুক্তিযোদ্ধা খবির উদ্দিন, আব্দুল কাদির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ।
এদিকে স্মারকলিপির শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামের বানান ভুল লেখা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্থলে লেখা রয়েছে ‘মুজবুর রহমান’। বাংলাদেশের স্থলে লেখা রয়েছে ‘বাংরাদেশ’। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি শব্দে ভুল বানান লক্ষ করা গেছে। স্মারকলিপিটি না পড়েই জেলা সভাপতি এতে স্বাক্ষর করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
স্মারকলিপির বিষয়ে কিছুই জানেন না দাবি করে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল (ভিপি বাদল) বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এমনকি এ নিয়ে কোনো সাংগঠনিক আলোচনাও করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘স্মারকলিপিটি জেলা কমিটির দফতর সম্পাদক কম্পিউটারের দোকান থেকে লিখে এনে আমাকে পড়ে শুনিয়েছেন। পড়ে শোনানোর সময় উচ্চারণে ভুল ছিল না। তা ছাড়া সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ততার কারণে লেখাটি পড়ার সুযোগ হয়নি। তাই বানান ভুলের বিষয়টি আমি খেয়াল করিনি।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের ফোনের মাধ্যমে জানতে পেরে দফতর সম্পাদককে তার ভুলের ব্যাপারে কৈফিয়ত চেয়েছি। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর কখনো যাতে এমন ভুল না হয়, সে জন্য তাকে কড়াভাবে সতর্ক করেছি।’
প্রসঙ্গত, গত ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের ৫০ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে সমগ্র দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক শপথবাক্য পাঠ করানো অবস্হাতেও ‘মুজিব বর্ষ’ এর বানান ভুলের মত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্হিতির সৃষ্টি হয়