দেশ বেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে, যেটা মানুষ সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভালোভাবেই টের পাচ্ছে। বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের একটি খারাপ পর্যায়ে নামিয়ে আনবে, এটা স্পষ্ট। ঠিক কি কারণে এরকম অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে এবার এ বিষয়ে কথা বলেছেন আলোচিত সমালোচক পিনাকী ভাট্টাচার্য, যার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
আওয়ামী লীগ ভাই, হাসিনা ও দলকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করবেন না। আপনারা গেছেন, একেবারেই গেছেন। হাসিনা নিজেও তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি রক্ষা করছেন না। অবাক লাগেনা এইটা দেখে? দেখেন, কয়েকদিন আগে হাসিনা বলছিলেন তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। হাসিনা ভার্চুয়ালি পাওয়ারলেস। তিনি তার ক্ষমতা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হারাইছেন। অথবা আউলায়ে গেছেন। নাহলে একের পর এক ব্যাখ্যা অযোগ্য পদক্ষেপ কেন নিতেছেন তিনি?
আপনি আমাকে এই ব্যাখ্যা দেন, তাইওয়ানের অ”গ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কারণে নজিরবিহীনভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা না বলেই সফরসূচি ঠিক করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ঠিক তার আগের মুহুর্তে নজিরবিহীনভাবে আই এম এফের ঋণের দোহাই দিয়া তেলের দাম নজিরবিহীন ভাবে বাড়ানোটা চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেই বার্তা দেয়া যে, আমরা আইএমএফের লোন নিচ্ছি। চীন কখনোই তার প্রভাবাধীন কোনো দেশকে আমেরিকার ফোল্ডে ঢুকুক এটা চায় না। চীনের জন্য বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এই বাংলাদেশকে তারা হারাতে চায় না। তাই চিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসা। কারণ সামহাউ কোন পরাশক্তি জেনে গেছে চীনারা কী বলতে আসতেছে। বাংলাদেশ সম্ভবত আর কোনো চীনা ঋণ পাবে না। আর চাইনিজ লোন না পাইলে হতে হারিকেন নিতে হবে।
তেলের দাম বৃদ্ধি শুধু পরিবহন খরচ বাড়াবে না। খাদ্য উৎপাদন হবে না। খাবারের দাম অনেক বেড়ে যাবে। কারণ সেচের জন্য ডিজেল প্রয়োজন। বাংলাদেশের আয় ব্যাপকভাবে কমে যাবে। আর লোন শোধের খাড়া আসতেছে।
বাংলাদেশ গভীর অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। আমি হিসাবটা খুব সহজেই অংক করে দেখায়ে দিবো কেন গভীর অর্থনৈতিক সংকটে। বাংলাদেশ খুব শিগগিরই দেউলিয়া হয়ে যাবে। এবং এটি খুব দ্রুত ঘটবে।
দেশকে দেউলিয়া করার জন্য দায় হাসিনার এবং একান্তই হাসিনার। লাখ টাকার বালিশ, দুনিয়ার সবচেয়ে দামী রাস্তা, সবচেয়ে দামী ব্রিজ বানায়ে যে অগাধ লুটপাট হইছে কারণ সেইটাই। ইউক্রেনের যু”দ্ধ তো একটি অজুহাত। ইউক্রেনে যু”দ্ধ না হলেও বাংলাদেশে এ অবস্থা হতো। ফইন্নিরা ক্ষমতা পাইলে তাই হয়। খালি খায় খালি খায়, হুশ থাকেনা। এখন তিনি আইএমএফের কাছে যে ঋণ চাইছেন তা বেইল আউট হিসেবে। বেইল আউট মানে কি জানেন? মানে দেউলিয়া হওয়া ঠেকাতে বিশাল ঋণ। সেটা সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার। কিন্তু হাসিনার সাঙোপাঙোরা ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করছে। কী পরিমানে লুটপাট হইছে চিন্তা করেন।
এই লুটপাট নিরংকুশ করতে আমাদের নির্বাসিত করা হয়েছে। আমরা অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েছি। আমাদের পরিবার ধ্বং”স হয়েছে, আমাদের জীবিকা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের এমন কোনো অপবাদ নেই যা দেওয়া হয় নাই।
আমাদের অপরাধ কি ছিল? আমি অবৈধ আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলাম। আসন্ন ভ’য়াব”হ সংকট মোকাবেলায় নাগরিকরা মানসিকভাবে প্রস্তুত হন। যতদিন হাসিনার শাসন থাকবে ততদিন এই সংকট থেকে মুক্তি পাবেন না। হাসিনার শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো বিকল্প আপনার কাছে নেই।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট খুব বেশিদিন থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নেতারা বলছেন এ ই ধরনের পরিস্থিতি খুব অল্প সময়ের জন্য। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ সমস্যা অনেকটা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে সরকার। আপাতত এই পরিস্থিতিতে জনগণকে ধৈর্য ধরতে বললেন নেতারা।