দেশে অনেক ক্ষমতাসীন লোক রয়েছে যারা নিজেদের ক্ষমতা খাটিয়ে গরিবের উপর অন্যায় অত্যচার করে। তবে সবাই অন্যায় আচরন করে পার পেয়ে যায় না। সম্প্রতি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলসারা গ্রামের মোশারফ হোসেন ও তার ছেলের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা সারা এলাকাবাসি ওই ইউএনওর উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। যে ঘটনা নিয়ে সারা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
মোশারফ তার শাস্তির কথা জানতে পেরে ছেলে ক্ষমা চাইতে গেলে বাবাসহ তার ছেলেকে কারাগারে পাঠান উপজেলা কর্মকর্তা নির্বাহী যোবায়ের হোসেন।শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশ বাড়ি ইউপির সভাপতি সাহাবুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলসারা গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন প্রায় ২০ বছর আগে বাবা-মায়ের কাছ থেকে জমি কিনে একটি টিনের ভবনে বসবাস করছিলেন। কিন্তু সুপরিকল্পিত জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই গ্রামের কিছু মানুষ রেজিস্ট্রিকৃত সড়কে বাড়িগুলো তৈরি করে দাবি করে জাতিসংঘে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের সাথে, জাতিসংঘ কৃষককে তার উদ্ভিদ স্থানান্তর করার জন্য সময় দিয়েছে। কিন্তু মোশাররফ হোসেন আর্থিক সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটি সরাতে পারেননি।
গত বুধবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফোর্স, সার্ভেয়ার ও কুয়াশার সঙ্গে মিলে মোশাররফ হোসেনের দেয়াল ও একটি বেডরুমের দেয়াল (আংশিক) ভাঙতে যান। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেয়াল ভাঙা বন্ধ করে দেন।
এরপর তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মোশাররফ হোসেনকে অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করতে বলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি স্থানীয় সভাপতিকে রাত ৮টার দিকে কৃষকের সঙ্গে যেতে বলেন। স্থানীয় ইউপি সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে আসা হলে জাতিসংঘ তাকে পুনরায় অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি আবারও স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীকালে, জাতিসংঘ একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে এবং সরকারের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কৃষক মোশাররফ হেসকে এক মাসের বিনা বেতনে কারাদণ্ড দেয়। এ খবর পেয়ে তার ছেলে মাহফুজ (৩০) জাতিসংঘ কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষমা চান।
মাহফুজের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, “স্থানীয় একটি চক্র আমাদের পরিবারকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছে। আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিচার থেকে বঞ্চিত।”
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জোবায়ের হোসেন বলেন, রেকর্ডিও রোডে রান্নাঘর নির্মাণ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী সাজেদুর রহমান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাজ সংবিধান পরিপন্থী।
এই ঘটনায় এখনো ভুক্তভোগী ওই বাপ ছেলেকে রেহাই করা হয় নি। তবে সারা এলাবাসি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছে বাপ ছেলের উপর ক্ষমতাসী লোকেরা স্বার্থের জন্য অন্যায় ভাবে অত্যাচার করছে। অবিলম্বে তাদের রেহাই করার দাবিও জানান তারা।