বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সব থেকে বড় দলটির নাম হলো আওয়ামীলীগ। আর ২০০৮ এর পর থেকে বলতে গেলে আওয়ামীলীগের জন্য চলছে সুখের সময়। কারন ০৮ থেকে ১৮ এই দশ বছরের বেশি সময় ধরে টানা ক্ষমতার মসনদে বসে আছেন তারা। এ দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১ তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। কমিটির তিন বছরের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে। সম্মেলনের তারিখও ঠিক করা হয়েছে। তবে দলের বিভিন্ন ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনের অনেকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কেউ এক বছর, কেউ দুই বছর আবার কেউ পাঁচ বছরের জন্য ‘বোনাস সময়’ কাটাচ্ছেন।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর দলটির ২২তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আশা করছিল শুক্রবার হতে পারে ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের বহুল কাঙ্ক্ষিত সম্মেলনের তারিখ।
২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দুই মাস পর ৩১ জুলাই ২০১৮ তারিখে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী এক নম্বর সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে সভাপতি এবং এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাদের ভাষ্য, সম্মেলন ও কমিটি ঘোষণার দিন হিসেবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ। তবে শোভন-রাবিনকে অপসারণের পরও চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কমিটির মেয়াদ শেষ হয়।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ। সংগঠনের বর্তমান সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক।
দীর্ঘদিনেও তারা সংগঠনের সব কমিটি সম্পন্ন করতে পারেনি।
আলোচনা রয়েছে, আসন্ন সম্মেলনের সময় বিদায় নিতে পারেন মহিলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সাফিয়া খাতুন। তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক।
তারা দুজনই ১৮ বছর ধরে এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে সব কমিটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
আসন্ন সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের প্রায় অর্ধশত কেন্দ্রীয় পদে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানা গেছে।
২০১৭ সালের ১৯ মার্চ সম্মেলনে তাঁতী লীগের সভাপতি হন ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলী এবং সাধারণ সম্পাদক হন খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি। এ ব্যাপারে আমরা সমন্বয় করছি। নেতার উপস্থিতিতে সম্মেলন করতে চান তারা। আমরা তার শিডিউল অনুযায়ী তারিখ দেব।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে এসব সম্মেলন হবে কি হবে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে মেয়াদ শেষ হওয়া সব (সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম) সংগঠনের সম্মেলন করব।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। বৈঠকের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী ১০ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। যুব মহিলা লীগের সম্মেলন ২৪ নভেম্বর এবং মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ৩ ডিসেম্বর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহানগর উত্তর ও উত্তরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নির্বাচন হতে পারে।
এসব সম্ভাব্য তারিখ আওয়ামী সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তিনি সম্মতি দিলেই নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন হবে বলেও জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, তবে এবার শোনা যাচ্ছ একটি বড় ধরণের গুঞ্জন। আর তা হলো এবারের আওয়ামীলীগের সম্মেলনে আসতে চলেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। এবার পরিবর্তন হতে পারে দলের সভাপতি এবং সম্পাদকের।