আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৩ হাজার ৩৬২ জন। তবে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় ১০ নেতা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ না হওয়ায় তাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সৈয়দা জেবুন্নেজা হক, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম খান প্রমুখ। ঠান্ডু, বেগম আক্তার জাহান ও তারিক সুজাত মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ আসনে মনোনয়ন পেতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুব রহমান রুহেল। তার পক্ষে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তাই তিনি মনোনয়ন ফরম নেননি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। চলতি বছরের ২১ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় তিনি মনোনয়ন ফরম নেননি।
আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক সংরক্ষিত মহিলা আসনে (সিলেট-সুনামগঞ্জ) দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সিলেটের অধিকাংশ মানুষের কাছে ‘ভাবী’ নামে পরিচিত সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বৃহত্তর নারী অধিকার আন্দোলন ও রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তি। মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি সংগ্রামে জড়িয়ে আছে তার বর্ণাঢ্য জীবন। সৈয়দা জেবুন্নেজা হক বলেন, “দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে দুঃসময়ে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। পুরস্কার হিসেবে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। এখন নতুনরা আসুক।”
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের সংসদ সদস্য কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান। এ আসন থেকে তিনি পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বয়স বিবেচনায় তিনি আগামী নির্বাচনে তার ছেলে রাশেক রহমানকে দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। ছেলেকে নিজের আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি। চলতি বছরের ১৩ জুলাই গণভবনে বৈঠকে যান রংপুর আওয়ামী লীগ নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের আশিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। দলের মনোনয়ন পেলে ওই এলাকা থেকে ছেলেকে নির্বাচিত করতে কাজ করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে পরে রংপুরের অন্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।
দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ব্যস্ত থাকায় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। শিল্প ও বাণিজ্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু ও তারিক সুজাতও এবার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। তারিক সুজাত বলেন, ‘দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে দায়িত্ব পালন করছি। আমি নির্বাচন করতে ইচ্ছুক নই।
কার্যনির্বাহী সংসদের আরেক সদস্য বেগম আখতার জাহানও মনোনয়ন ফরম নেননি। তিনি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চলতি বছরের ১৩ আগস্ট আরও দুই বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।