আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পুনর্বাসন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। শনিবার রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে “স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আর রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার নেই। গণহত্যার জন্য যারা অনুশোচনা করতে পারে না, তারা রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে।
তিনি বলেন, বিচারের আগ পর্যন্ত সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না। গণহত্যা সমর্থনকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে বাতিল করতে সংবিধানে একটি কমিশন থাকা প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যতে এমন দল আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে।
সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে পার্থ বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার সম্ভব। বর্তমান সংবিধান ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো সরকারই ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারে। এই সংবিধান বারবার জনগণের ওপর অত্যাচার করতে ব্যবহৃত হয়েছে। যে সংবিধান জনগণকে সুরক্ষা দিতে পারে না, সেই সংবিধান মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।
আন্তর্জাতিক চুক্তি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, জনগণের অগোচরে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করা উচিত নয়। এসব চুক্তি জনগণের সামনে স্বচ্ছতার সঙ্গে হওয়া জরুরি।
তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। তার মতে, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি তিনি মাদক প্রতিরোধে সংবিধানে আরও কঠোর আইন অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন।
অর্থ পাচার বন্ধে শক্তিশালী আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে পার্থ বলেন, যারা বিদেশে টাকা পাচার করে, তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইনে বিচার হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, যাদের কারণে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে শাস্তি পেতে হবে।
আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থা থেকে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসা দলগুলোর শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পার্থ বলেন, আমরা আধুনিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো কোনো রাজনৈতিক দল চাই না। দেশকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে, যা জনগণের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সংবিধানে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধে কটূক্তির শাস্তি অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া সমানুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে সংসদ সদস্য নির্বাচন এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও করেন তিনি।